Skip to content

Lokogandhar

  • Home
  • Contact Us
  • List of Content
  • Peer Review Policy
  • Publisher & Editors
  • About Us
  • Author Guidelines

Temporal Relationship Between Music and Mental Health

December 4, 2023 by LOKOGANDHAR ISSN : 2582-2705

Dr. Ajanta Jana, Guest Assistant Professor, Sadhu Ramchand Murmu University, Jhargram

View Post

Abstract: Music, a universal language that transcends cultural boundaries, has been an integral part of human experience throughout history. This paper delves into the intricate interplay between music and mental health, focusing on the temporal dimensions that shape this relationship. By examining how music affects various facets of mental well-being over time, from immediate emotional responses to long-term therapeutic effects, we aim to unravel the complexities that underlie this profound connection. The exploration encompasses the impact of rhythmic patterns, melodic structures, and temporal dynamics on mood regulation, stress reduction, and cognitive function. Furthermore, we scrutinize the evolving field of music therapy, investigating the temporal factors that contribute to its effectiveness in treating mental health disorders. As we navigate the temporal landscape of music and its influence on the mind, we strive to deepen our understanding of the therapeutic potential that lies within the harmonies, rhythms, and temporal intricacies of musical expression.

মানসিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গীত এবং তার সময়চক্রের সম্পর্ক, ড. অজন্তা জানা, অতিথি অধ্যাপিকা, সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয়, ঝাড়গ্রাম

ভারতীয় সঙ্গীতের অনন্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে একটি হলো রাগ-সুর পরিবেশনের জন্য দিন এবং রাতের নির্দিষ্ট সময় নির্ধারণ। এটা বিশ্বাস করা হয় যে , নির্দিষ্ট সময়ের নির্ধারিত রাগ তার সুরের সৌন্দর্য, সুরের থেকে পাওয়া বিভিন্ন অনুভূতি, রাগের রূপ-রস—এগুলোর কারণে তার নিজস্ব মহিমান্বিত জায়গা অধিকার করে আছে অন্যান্য সঙ্গীতের সঙ্গে তুলনায়। কোনো রাগ ভোরে, কোনোটি সন্ধ্যায়, আবার কোন রাগ মধ্যরাত্রি— দিন-রাতের 24 ঘন্টার নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট রাগের পরিবেশনে- রাগ তার সুগন্ধ ছড়িয়ে দেয় সঙ্গীতপ্রেমীর কাছে। ভোরের প্রথম দিকের রাগ আবার সন্ধ্যার রাগ কিংবা মধ্যরাতের রাগের নিজস্ব গুণ ও সময়ের সাথে স্বরের ও সুরের একাত্মতা আকর্ষক হয়, তার সুরের মূর্চ্ছনায় শিল্পী নিজে আবিষ্ট হয় এবং সঙ্গীতপ্রেমীদের মধ্যেও সেই সুবাস ছড়িয়ে পড়ে।

রাগ শোনার সময় বা প্রহর

       শার্ঙ্গদেবের ‘সঙ্গীত রত্নাকর’ গ্রন্থে সঙ্গীত সম্বন্ধে বলা আছে যে— ‘নৃত্যং গীতং তথা বাদ্যং ত্রয়ং সঙ্গীত ত্রয়ং সঙ্গীত মূচ্যতে’ অর্থাৎ সঙ্গীত বলতে নৃত্য, গীত ও বাদ্য— এই তিনের সমন্বয়কেই বোঝায়। ইংরেজিতে Music বলতে বোঝায়— “Vocal or Instrumental sounds having rhythm, melody, or hermony’’. ইংরেজিতে Music তথা সঙ্গীত থেকে নৃত্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে। বাংলাতেও ইংরেজি Music-এর মত সঙ্গীত থেকে নৃত্যকে বাদ দেওয়া হয়েছে। সঙ্গীত বলতে সুর-তাল-লয়-ছন্দ সমন্বিত কন্ঠসঙ্গীত ও যন্ত্রসঙ্গীতকেই বোঝানো হয়েছে। সঙ্গীতের সুরের মূর্চ্ছনার মাধ্যমেই মন ও শরীর যন্ত্রণামুক্ত থাকা সম্ভব। ডাক্তার, ওষুধ-পথ্য— এগুলোর পাশাপাশি মানসিক জায়গার ক্ষত নিরাময়ের সঙ্গীত প্রশংসার দাবি রাখে। মানসিক কষ্ট, মনের অসুখ সারাতে ডাক্তার-পথ্য ব্যর্থ হলে সঙ্গীত কিন্তু পারে মনের কষ্টের মুক্তি দিয়ে সুস্থ সুন্দর ছন্দে জীবনের গতিপথকে চালনা করতে। এখানেই মিউজিক থেরাপীর সার্থকতা। দুঃখ, কষ্ট, আনন্দ, ব্যর্থতা— এইসব অনুভূতিতে সঙ্গীতই পারে অনাবিল শান্তি ও তৃপ্তি দিয়ে মনের জ্বালা-যন্ত্রণা উপশম করতে, মনকে শান্ত রাখতে সাহায্য করে। মধুর সুর-তাল-ছন্দের মধ্য দিয়ে রোগীর রোগের তীব্রতা কমানোর চেষ্টা করা হয়। শুধুমাত্র মিউজিক-থেরাপির মাধ্যমে রোগমুক্তি সম্ভব নয়, অন্যান্য চিকিৎসার পাশাপাশি সঠিক সঙ্গীত প্রয়োগ অর্থাৎ মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে ভালো ফল পাওয়া যায়। রোগী সুস্থ হয়ে যায়।

মানব শরীর ও মনের মধ্যে ঘটে যাওয়া প্রতিদিনের পরিবর্তন চক্রের উপর ভিত্তি করে রাগ-রাগিনীর সাথে দিনের বা রাতের সময়ের সংযোগ তৈরি করা হয় যা মানব-মনের সারাদিনের বিভিন্ন সময়ের বিভিন্ন মেজাজ এবং আবেগের উপর প্রভাব ফেলে এবং তাকে উদ্দীপিত করে। প্রতিটি রাগ-রাগিনী মানুষের নির্দিষ্ট অনুভূতির ও মেজাজের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাগের প্রকৃতি মানবমনে ব্যক্তিবিশেষে বিভিন্ন অনুভূতির সঞ্চার করে, আবার অনুভূতির পরিবর্তন ঘটাতেও সাহায্য করে। যেমন— মানসিক কষ্ট থেকে ভালোবাসার মাধ্যমে মনের আনন্দ আনতে, মনে ধ্বনাত্মক শক্তির সৃষ্টি-বৃদ্ধিতে বিভিন্ন রাগ খুবই উপকারী। বাদ্যযন্ত্র অথবা কন্ঠের মাধ্যমে সঙ্গীতের স্বর-সুর কিভাবে মানুষের আচরণকে প্রভাবিত করে এবং উন্নত করে, তা নিয়ে প্রাচীন সঙ্গীতবিদ্‌গণ ও পরবর্তী সঙ্গীত-বিজ্ঞানীরা ব্যাপকভাবে গবেষণা করেছেন। সঙ্গীতের নিরাময় ক্ষমতার মাধ্যমে দুঃখ-বিরক্তি থেকে সুখ-শান্তি— এই অনুভূতির উত্তরণ ঘটা সম্ভব। মানসিক রোগীর মনের রোগ নিরাময়ে মিউজিক থেরাপি ভীষণ ফলপ্রসূ। জানা গেছে যে, প্রাচীনকাল থেকে মিশর দেশে মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা হয়। পরবর্তীকালে প্রধানত অপারেশন থিয়েটারে মিউজিক প্রয়োগ করা হত। বর্তমানে এগুলোর গন্ডি পেরিয়ে বিভিন্ন অসুখের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষভাবে সঙ্গীতের মাধ্যমে রোগীকে সুস্থ রাখার চেষ্টা করা হচ্ছে।

       আয়ুর্বেদশাস্ত্র মতে বিশ্বাস করা হয় যে, মূলত মানবদেহে তিনটি রোগের অথবা তিনটি উপাদানের প্রাধান্য লক্ষ্য করা যায়। এই শাস্ত্রের ভাষায় এগুলো হলো শ্লেষ্মা, পিত্ত এবং বাত। এগুলি দিনের ২৪ ঘন্টা সময়ে উত্থান এবং পতন— এই চক্রাবর্তে কাজ করে। এছাড়াও এই তিনের প্রতিক্রিয়া ঋতুভেদে ভিন্ন হয়। তাই এটাই মানা হয় যে— সঠিক সময়ে সঠিক রাগের চর্চা ও শ্রবণ মানুষের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলতে পারে।

রাগ এবং রাগের সময়চক্র :

নিম্নলিখিত সময়সূচির মাধ্যমে নির্দিষ্ট সময়ে অর্থাৎ ২৪ ঘন্টা সময়ে রাগের সময়কালের সংক্ষিপ্তসার তৈরি করা হয়েছে। চব্বিশ ঘন্টা সময়কে আট প্রহরে ভাগ করা হয়েছে অর্থাৎ প্রতি তিন ঘন্টা অন্তর প্রহর গণনা করা হয়েছে।

  • ভোর ৪টা — সকাল ৭টা (রাতের চতুর্থ প্রহর) — ভোর (সূর্যোদয়ের আগে)
  • সকাল ৭টা — সকাল ১০টা (দিনের প্রথম প্রহর) — প্রভাত; ভোরবেলা; সকাল
  • সকাল ১০টা — দুপুর ১টা (দিনের দ্বিতীয় প্রহর) — সকালের দ্বিতীয় পর্যায়; দুপুর
  • দুপুর ১টা — বিকেল ৪টে (দিনের তৃতীয় প্রহর) — বিকেল
  • বিকেল ৪টে — সন্ধ্যা ৭টা (দিনের চতুর্থ প্রহর) — সন্ধ্যার গোধূলি; সন্ধ্যা; সূর্যাস্ত
  • সন্ধ্যা ৭টা — রাত ১০টা (রাতের প্রথম প্রহর) — সন্ধ্যা; সন্ধ্যার দ্বিতীয় পর্যায়
  • রাত ১০টা — রাত ১টা (রাতের দ্বিতীয় প্রহর) — রাত; মধ্যরাত
  • রাত ১টা — ভোর ৪টে (রাতের তৃতীয় প্রহর) — গভীর রাত

       আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, আমাদের দেহের মধ্য দিয়ে প্রতিদিন দুটি পরিবর্তনের চক্র ঘটে। একএকটি চক্রে প্রধানত আসে বাত, পিত্ত ও শ্লেষ্মা।

দুটি চক্রের সময়সূচী :

প্রথম চক্র

সকাল ৬টা — সকাল ১০টা — শ্লেষ্মা

সকাল ১০টা — দুপুর ২টো — পিত্ত

দুপুর ২টো — সন্ধ্যে ৬টা — বাত

দ্বিতীয় চক্র

সকাল ৬টা — সকাল ১০টা — শ্লেষ্মা

সকাল ১০ টা — দুপুর ২টো — পিত্ত

দুপুর ২টো — সন্ধ্যে ৬টা — বাত

রাগ ও ঋতু :

       দিনরাতের আট প্রহরের সঙ্গে সঙ্গীত তথা রাগের পরিবেশনা ওতপ্রোতভাবে সংযুক্ত, তেমনি ঋতুর সঙ্গেও সঙ্গীতের সম্পর্ক স্থাপন করেছেন সঙ্গীতজ্ঞগণ। যেমন— বর্ষাঋতুর রাগ ‘মেঘ’, ‘মল্লার’; বসন্ত ঋতুর রাগ ‘বসন্ত’, ‘বাহার’ ঋতু-উপযুক্ত রাগগুলো দিন-রাতের যে কোনো সময় গাওয়া বা বাজানো যেতে পারে। এই রাগগুলোর পরিবেশনের ক্ষেত্রে দিন-রাত্রি সময়ের তুলনায় ঋতুকেই গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের সঙ্গীতের ক্ষেত্রে, সুরের ক্ষেত্রে সময়ের বাধ্যবাধকতা কিছুটা শিথিল, ঋতু মুখ্য।

বসন্ত ঋতু— এই ঋতুতে সূর্যের তাপে বর্ধিত শ্লেষ্মা তরল হয়ে যায়, যা রোগের কারণ হয়ে দাঁড়ায়।

গ্রীষ্ম ঋতু— এই ঋতুতে সূর্যের রশ্মি তীব্র হয়। শ্লেষ্মা কমে বাত দিনে দিনে বাড়ে।

শরৎ ঋতু— বর্ষার ঠাণ্ডা, স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ার পর হঠাৎ শরৎঋতুতে সূর্যের আলোয় পিত্ত বেড়ে যায়।

ঋতু অনুযায়ী রাগ নির্বাচন

The Theory of Hindustani Ragas 
ঋতুরাগ
শীতভৈরব
বসন্তহিন্দোল
গ্রীষ্মদীপক
বর্ষামেঘ
শরৎমালকোষ
হেমন্তশ্রী

রাগের মেজাজ ও সময়ের সম্পর্ক :

       রাগের মেজাজের সঙ্গে সময় এবং এই দুয়ের সঙ্গে মানব মনের সম্পর্ক নিয়ে বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ হয়েছে, যার মাধ্যমে উপনীত সিদ্ধান্ত কিছু ক্ষেত্রে বিতর্কিতও থেকেছে।

       ‘বৈরাগী’ কাকভোরের রাগ। ‘ললিত’, ‘বিভাস’, ‘ভৈরব’ হলো শান্ত প্রকৃতির রাগ। কর্মমুখর সকাল শুরুর আগে প্রাতঃকালে প্রকৃতি শান্ত, স্নিগ্ধ, গম্ভীর অবস্থায় থাকে তার সাথে মানুষের মনও সারারাত্রি নিদ্রার পর ভোরের সূর্যোদয়ের সময় শান্ত, স্নিগ্ধ রাগের (বিভাস ও অন্যান্য) চর্চার মধ্য দিয়ে মানসিক স্থিতি-শান্তিলাভ করে। সারাদিনের নানা কাজ ও সংসারের নানা পরিস্থিতির সাথে মোকাবিলার জন্য শান্ত মস্তিষ্কের প্রয়োজন। ভোরের রাগ শ্রবণ বা গায়নের মধ্য দিয়ে অশান্ত মনকে শান্ত ও স্থির করা সম্ভব। রাগে ব্যবহৃত স্বর-সুর দ্বারা প্রকাশিত রাগের আমেজ অনুযায়ী সূর্যোদয়ের সঙ্গে সঙ্গে দিনের বিভিন্ন সময়ে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবে রাগগুলিকে বন্টন করা হয়েছে। এতে রাগ সুন্দর চরিত্রের অধিকারী হয়েছে। দিনের নির্দিষ্ট সময়ের সাথে সাথে রাগের পরিবেশনের জন্য বিভিন্ন ঋতুও বরাদ্দ করা হয়েছে। যেমন— বর্ষা, বসন্ত, ফসল-কাটা। রাগে ব্যবহৃত স্বর, স্বরপ্রয়োগের রীতি, স্বরের গতিবিধি, রাগের লাবণ্য, সৌন্দর্য, স্বরের গভীরতা, অক্টেভ ইত্যাদির উপরেও রাগের প্রকৃতি, মেজাজ নির্ভর করে। যেমন ধরা যাক্‌— ‘পূরিয়া’, ‘সোহিনী’, ‘মারোয়া’ রাগের স্বর সা, রে, গ, ম, ধ নি একই কিন্তু রাগে ব্যবহৃত স্বরের প্রভাব এবং স্বর-সুরের চলন আলাদা। তাই আলাদা আলাদা নাম দেওয়া হয়েছে, যা আলাদা আলাদা মেজাজ বা আমেজ তৈরি করে। শেষ বিকেলের রাগ হিসেবে ‘মারোয়া’ পরিবেশন করা হয়। সারাদিনের ক্লান্তি, অস্বস্তিকর অনুভূতির সাথে ‘মারোয়া’ রাগের মেজাজ মিলে যায়। এর স্বরগুলি হল— সা রে গ ম, ধ নি ধ ;

, নি ধ ম, গ রে সা। বাদী-সম্বাদী হিসেবে রে ও ধ-এর গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার ম ও সা বিশেষভাবে প্রয়োগের কারণে রাগের নিজস্ব মেজাজ তৈরির জন্য সহায়ক ফ্যাক্টর। ‘নি ধ নি ধ ম’ খুব পরিচিত স্বরসমষ্টি। ‘ধ ম, গ ম, গ রে সা।  রে গ রে’ এবং এর পাশাপাশি এই রাগের ‘ধ। নি। রে গ ম, ধ নি রে’ এই স্বরসমষ্টি সা স্বরকে টোনিক স্বর হিসেবে দাবী করে। এই স্বরসমষ্টিকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাদ রেখে দিলে, প্রথম স্বরসমষ্টির মতো ‘ । নি ধ ম, গ রে সা’— স্বরসমষ্টির চলন উত্তেজনা সৃষ্টি করে এবং ‘গ’ স্বরের উপর বিশ্রামের আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে। ‘পূরিয়া’ রাগের কিছু স্বরসমষ্টি হল— ‘নি়। রে সা গ ম ধ নি রে। সা গ ম, ধ নি রে’— যেখানে ‘নি’ কে বাদী- সম্বাদী ধরা হয়। আরো কিছু চলন হল—

  1. নি়। রে গ ম, ধ গ ম— গ— রে— সা—
  2. নি়। রে— নি়। ম -সা

এই রাগ পূর্বাঙ্গপ্রধান রাগ। এই রাগ গোধূলি-লগ্নে পরিবেশন করা হয়।

‘সোহিনী’ রাগের স্বরসমষ্টি হল—

  1. গম, ধ নি
  2. সা। রে। সা
  3. নি ধ ম, ধ ম, গ রে সা

ধ ও গ হল যথাক্রমে বাদী ও সম্বাদী। আরো কিছু চলন হল—

— । —,ধ নি । ধ নি , ধ নি । নি ধ ম, গ গ রে সা। এই রাগের স্বরসমষ্টিতে সা-এর ব্যবহার হল এই ভাবে — নি ধ নি । নি ধ ম, গ ম, ধ নি । । । নি । ধনি ম, ধ নি । ধনি ম, ধ গম, ম, ধগম, ম, গ রেসা নি়। সাগম, ধনি । —নি। সাগম, ধনি । —, ম ধ নি । ধনি । ধনি। —এই স্বরের চলন থেকে বোঝা যায় এটি উত্তরাঙ্গপ্রধান রাগ, মূলত গাওয়া হয় শেষরাত্রিতে। এতে মধ্য-তার, তার সপ্তকের ব্যবহার বেশি। শুধুমাত্র রাগ পরিবেশনার সময় নয়, রাগের স্বর-সুরের সঠিক প্রয়োগ, চলন এবং গায়কীর দ্বারা এর উপকারিতা পাওয়া সম্ভব। সঠিক স্বর-সুর-গায়কী প্রয়োগের মাধ্যমে রাগের সঠিক বর্ণ-গন্ধ এবং নিজস্বতা তৈরি হয়। এর সঠিক প্রয়োগের দ্বারা স্বাস্থ্যের সঠিক উপকারিতাও আছে। এখানে কিছু রাগের পরিবেশনের সময় তালিকার আকারে দেওয়া হল—

ঠাটরাগপরিবেশনের সময়
বিলাবলমাণ্ডযেকোনো সময়
কাফীকাফীযেকোনো সময়
ধানীকাফীযেকোনো সময়
পিলুকাফীযেকোনো সময়
ভৈরবীভৈরবীযেকোনো সময়
বিলাবলবিলাবলসকাল
 দেশকারসকাল
 হংসধ্বনিসন্ধ্যে
 শংকরাসন্ধ্যে
 পাহাড়ীসন্ধ্যে
 দূর্গারাত্রি
কল্যাণহিন্দোলসকাল
 শুধ্‌সারংবিকেল
 গৌড়সারংবিকেল
 ভূপালীসন্ধ্যে
 কামোদসন্ধ্যে
 ইমন কল্যাণসন্ধ্যে
 শ্যামকল্যাণসন্ধ্যে
 ইমনসন্ধ্যে
 শুধ্‌কল্যাণসন্ধ্যে
 মারুবেহাগসন্ধ্যে
 নন্দরাত্রি
 কেদাররাত্রি
 ছায়ানটরাত্রি
 হামীররাত্রি
 বেহাগরাত্রি
খাম্বাজদেশসন্ধ্যে
 খাম্বাজসন্ধ্যে
 তিলংসন্ধ্যে
 তিলককামোদরাত্রি
 রাগেশ্রীরাত্রি
 ভিন্ন-ষড়জরাত্রি
 ঝিঁঝোটিরাত্রি
 কলাবতীরাত্রি
 জয়জয়ন্তীরাত্রি
 গোরখকল্যাণরাত্রি
ভৈরবগুণকলীসকাল
 আহীর ভৈরবসকাল
 বৈরাগী ভৈরবসকাল
 ভাটিয়ারসকাল
 ভৈরবসকাল
 নট্‌-ভৈরবসকাল
 কালিংড়াসকাল
 যোগীয়াসকাল
 বিভাসসকাল
পূর্বীবসন্তসকাল
 ললিতসকাল
 পূর্বীবিকেল
 পূরিয়া-ধনেশ্রীসন্ধ্যে
 শ্রীসন্ধ্যে
মারোয়াসোহিনীসকাল
 পূরিয়াসন্ধ্যে
 মারোয়াসন্ধ্যে
কাফীগৌড়মল্লার 
 মিঞাঁ মল্লার 
 বৃন্দাবনী সারংবিকেল
 মধুমদ্‌সারংবিকেল
 ভীমপলশ্রীবিকেল
 বাহাররাত্রি
 বাগেশ্রীরাত্রি
 মল্লাররাত্রি
 শিবরঞ্জনীরাত্রি
 মালগুঞ্জীরাত্রি
আশাবরীআশাবরীসকাল
 দেশীসকাল
 জৌনপুরীসকাল
 দরবারীরাত্রি
 আড়ানারাত্রি
ভৈরবীভূপাল তোড়ীসকাল
 বিলাসখানী তোড়ীসকাল
 মালকোষ-পঞ্চমরাত্রি
 মালকোষরাত্রি
তোড়ীগুর্জরী তোড়ীসকাল
 তোড়ীসকাল
 মধুবন্তীবিকেল
 মূলতানীবিকেল

       মস্তিষ্কের স্নায়ুর সঙ্গে সঙ্গীতের একটা নিবিড় সম্পর্ক আছে। সঙ্গীত শ্রুতি-স্নায়ুর মাধ্যমে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে প্রবেশ করলে তার বেশিরভাগটাই মস্তিষ্কে যায় ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের উদ্দেশ্যে এবং বাকিটা যায় সোজা সুষুম্নাকাণ্ডের মোটর স্নায়ুতে। তাতেই আমাদের পেশী বেশি সচল হয় স্বাভাবিকের তুলনায় তালের সাথে সাথে। তখনই আমরা নাচ করি, তাল ঠুকি, সময় বেঁধে তালে তালে হাঁটি। এই বিজ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে স্ট্রোকের রোগীকে নতুন করে হাঁটতে শেখানো হয়, শরীরের অসাড় অংশে শক্তি ও সহিষ্ণুতা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হয়। কোমায় আচ্ছন্ন মানুষের শরীরে মিউজিকের মাধ্যমে থেরাপিস্টরা অসাড় শরীরকে উদ্দীপিত করার প্রয়াস করেন। সঙ্গীত মস্তিষ্কের সঙ্গে জড়িত প্রত্যেকটি স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে, স্নায়ুর পুনর্গঠন, পুণর্বৃদ্ধি ও শক্তিশালী করতে সাহায্য করে। মিষ্টি-মধুর সঙ্গীত যেমন ভারতীয়-পাশ্চাত্য শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, পুরোনো দিনের গান— এগুলোর মাধ্যমে রোগীর সংস্কৃতি, পছন্দের ইতিহাস, বয়স ও পরিবেশ এগুলোকে বিচার করে চিকিৎসা করা হয়। এইসব মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসায় সাধারণত র‌্যাপ বা রক মিউজিক ব্যবহার করা হয়না।

মানসিক চাপ বা স্ট্রেস— মিউজিক থেরাপির সাথে বিভিন্ন ছবি প্রদর্শনের মাধ্যমে স্ট্রেসমুক্ত করা যায়। রোগীকে শান্ত করা হয়। রোগীর মনের ভিতরে যে কারণে চাপ, কষ্ট হচ্ছে, রোগী সঙ্গীত-চিত্রকলার মাধ্যমে চিকিৎসকের কাছে যেন তার বহিঃপ্রকাশ করতে পারে।

ডিপ্রেশন —হতাশাগ্রস্থ মানুষের মনকে হতাশামুক্ত করতে মিউজিক খুব কার্যকরী ফ্যাক্টর। বিশেষত বয়স্কদের ক্ষেত্রে প্রধানত বয়সজনিত কারণে ও মহিলাদের ক্ষেত্রে মূলত হরমোনের কারণে ডিপ্রেশন হয়েই থাকে, অন্যান্য কারণ ব্যতিরেকে। এক্ষেত্রে মিউজিক খুব কার্যকর।

ঘুমের সমস্যা বা স্লিপ ডিজঅর্ডার — স্লিপ ডিজঅর্ডারের ক্ষেত্রে যন্ত্রসঙ্গীত খুবই কার্যকরী হয়। সহজে ঘুম না এলে হালকা আলো জ্বালিয়ে বা আলো নিভিয়ে পিয়ানো, সরোদ, সন্তুর, সেতার, এসরাজ, সারেঙ্গীর মিষ্টি-মধুর আওয়াজের মাধ্যমে ঘুমোনোর চেষ্টার ক্ষেত্রে খুবই এফেক্টিভ হয়।

ডিমেনশিয়া —এই রোগ বয়স্ক মানুষদের হয়। অ্যালঝাইমার রোগটি ডিমেনশিয়া রোগের একটি রূপ। এই রোগের মূল লক্ষণ হল— স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া এবং রোগীর চারপাশে কি ঘটছে তা বুঝতে না পারা। এগুলোর কারণে রোগীর পরিবেশের সঙ্গে সঙ্গে নিজের অসংযোগ তৈরি হয়। তাই রোগী কান্নাকাটি করে, আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। তখন সঙ্গীতের মাধ্যমে রোগীকে শান্ত করা হয়, মেজাজ ঠিক করা হয়, সহযোগী মনোভাব গড়ে তোলা হয় এবং রোগীর দৈনন্দিন কাজ করার ক্ষমতা গড়ে তোলা হয়। গবেষণাসংক্রান্ত তথ্য থেকে জানা যায় যে, এই রোগীদের হার্ট বা সেরিব্রাল স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি। মিউজিক থেরাপির মাধ্যমে এর সম্ভাবনা কমানো সম্ভব।

       এছাড়াও স্পেশালি এবেল্ড চাইল্ড ও অটিজম এবং নেশাগ্রস্থ মানুষদের ক্ষেত্রেও সঙ্গীতের মাধ্যমে তাদের স্বাভাবিক স্থিতাবস্থা, জীবনের স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করা, মানসিকভাবে শান্ত রাখা এবং স্বাভাবিক ছন্দে তাদের জীবনকে চালনা করার চেষ্টা করা হয় এবং ফলস্বরূপ উপকারও পাওয়া গেছে।

       এইসব ধরনের রোগ মানসিক-স্বাস্থ্যসংযুক্ত। সঙ্গীত এইসব ক্ষেত্রে খুব কার্যকরী ভূমিকা পালন করে। তাই মানসিক স্বাস্থ্য ও সঙ্গীত নিবিড় সম্পর্কযুক্ত।

তথ্যসূত্র :

  1. Nalapat Suvarna, Music Therapy in Management, Education & Administration, Readworthy Publications, New Delhi- 110002, ISBN 13:978-81-89973-73-5, First Published on 2008.
  2. Nalapat Suvarna, Ragacikitsa (Music Therapy), Readworthy Publications, New Delhi- 110002, ISBN 13:978-81-89973-69-8, First Published on 2008.
  3. Dr. Yashashri Vitonde, Music Therapy and Ayurveda (Non drug Psychotherapy), Notion Press, Published on 6th January, 2021, ISBN 978-1637811368
  4. মুখোপাধ্যায় ঈশিতা, মিউজিক থেরাপি, বেস্টবুক্‌স্‌, ১ এ কলেজ রো, কলকাতা ৭০০০০৯, প্রথম সংস্করণ জানুয়ারী ২০২০, ISBN 978-81-7926-240-5
  5. লাহিড়ী চিন্ময়, মগনগীত ও তানমঞ্জরী (দ্বিতীয় খণ্ড), মন্দিরা লাহিড়ী, কলকাতা- ৭০০০৪০, প্রথম প্রকাশ, ২৫শে ডিসেম্বর ১৯৮৩
  6. লাহিড়ী চিন্ময়, মগনগীত ও তানমঞ্জরী (তৃতীয় খণ্ড), মন্দিরা লাহিড়ী, কলকাতা- ৭০০০৪০, প্রথম প্রকাশ, ১৯শে ফেব্রুয়ারী ১৯৮৪
  7. https://www.hopkinsmedicine.org/health/wellness-and-prevention/keep-your-brain-young-with-music
  8. https://www.sangbadpratidin.in/lifestyle/music-therapy-to-cure-ailments/

Post navigation

Previous Post:

Swadesh Consciousness in the Background of the Partition of Bengal: A Literary Exploration of Rabindranath Tagore’s Perspectives

Next Post:

Exploring the Influence of Music on Folk Drama

Lokogandhar ISSN: 2582-2705 Impact Factor 3.57

Recent Posts

  • মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে নগর জীবন ও নগর রাষ্ট্র – দেবার্ক মণ্ডল
  • আটের দশক: মেধাকেন্দ্রিক ভাষাসচেতন কবি অলোক বিশ্বাস – ড. ঋদ্ধি পান
  •   রবীন্দ্রসংগীতের পাণ্ডুলিপি : রূপে রূপান্তরে – অভীক সরকার
  • অভিনেতার আত্মিক রূপান্তর: মঞ্চে সত্যের অন্বেষণ -নূর নবী মিরণ
  • Folk Deities of Bengal-Dr. Srabani Sen

Archives

  • July 2025
  • May 2025
  • March 2025
  • January 2025
  • December 2024
  • November 2024
  • September 2024
  • July 2024
  • May 2024
  • March 2024
  • January 2024
  • November 2023
  • September 2023
  • July 2023
  • May 2023
  • March 2023
  • January 2023
  • November 2022
  • September 2022
  • July 2022
  • May 2022
  • March 2022
  • January 2022
  • November 2021
  • September 2021
  • July 2021
  • May 2021
  • April 2021
  • March 2021
  • January 2021
  • November 2020
  • September 2020
  • July 2020
  • May 2020
  • March 2020
  • January 2020
  • November 2019
  • September 2019
  • January 2015
  • July 2014

Categories

  • Indigenous Art & Culture

Meta

  • Log in
  • Entries feed
  • Comments feed
  • WordPress.org
© 2025 Lokogandhar | Built using WordPress and SuperbThemes