Shakti Mandal: Empowering Mass Education and the Adult Education Movement in West Bengal
Sandeep Dey
Abstract: This study delves into the dynamic interplay between mass education initiatives and the Adult Education Movement in the state of West Bengal, with a particular focus on the transformative role played by Shakti Mandal. As an influential force in the region, Shakti Mandal has emerged as a key player in advancing educational opportunities for both the masses and adults seeking to enhance their skills and knowledge. The paper explores the historical context, key strategies, and impact of Shakti Mandal’s interventions in fostering widespread education. Through a comprehensive analysis, this research aims to contribute to a deeper understanding of the intricate relationship between mass education, adult education movements, and the pivotal role of organizations like Shakti Mandal in shaping the educational landscape of West Bengal.
আলোর পথিক : শক্তি মণ্ডল
মৃত্যু তুমি সহিষ্ণুতা শেখো,আমাদের প্রস্তুত হতে দাও”… (বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়)কবির এই আকুল আর্তি কি শোনে মৃত্যুর বিভীষিকা! তা নাহলে কি এভাবে অকালে সমাপ্ত হয় শক্তিদার মতো আলোর পথিকের জীবন পরিক্রমা! এ যে আমাদের কাছে দুঃসহ! এই ভয়ঙ্কর দুর্দিনে এক একটি বেসামাল মুহূর্তের অভিঘাতে হতাশাদীর্ণ-বেপথু মনের গভীরে আলো জ্বালবার অমূল্য জীবনের দীপগুলি যে একে একে নিভে যাচ্ছে! জানিনা এই নিদারুণ দুঃসংবাদ শক্তিদারই দীর্ঘদিনের অগ্রজ সঙ্গী নবতিপরপ্রায় পাহাড়ি দা কীভাবে সহ্য করছেন! এ রাজ্য তথা দেশের সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা আন্দোলনের বিশিষ্ট নেতা ও সংগঠক ছিলেন শ্রদ্ধেয় শক্তি মণ্ডল। কিন্তু আমাদের মতো অনেকের কাছেই তিনি ছিলেন অনিবার উৎসাহ ও প্রেরণা সঞ্চারক একজন পরম সুহৃদ, আত্মজন। শান্ত-স্থিতধী,হাসিমুখ নিয়ে সর্বদা ছুটে চলা শক্তিদার উজ্জ্বল ছবি আজও আমার স্মৃতিপটে সজীব। আমার কলকাতার জীবনে যে ক’জন মানুষ আমাকে চলার পথে উষ্ণতার বন্ধনে জড়িয়ে দিশা দিয়েছেন তাঁদের মধ্যে অন্যতম প্রিয় মানুষ ছিলেন শক্তিদা। বাহ্যিক আড়ম্বর ও আনুষ্ঠানিকতা বর্জিত,আত্মপ্রচার বিমুখ এই মানুষটির ছিল মানুষের প্রতি দুর্নিবার ভালোবাসা। তাই তাঁর অনিবার্য সংলগ্নতা ছিল কমিউনিস্ট আন্দোলনের স্রোতধারায়,সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা আন্দোলনের আলোক অভিযানে। ছাত্র আন্দোলন ও হোস্টেল জীবনের অন্যতম সহযাত্রী দেবাশিসদার সূত্রে তাঁরই ছোড়দা শক্তিদার সঙ্গে আমার পরিচয় ও ঘনিষ্ঠতা। তাঁর অফুরান প্রাণসম্পদ ও আকর্ষণী ক্ষমতায় যে পরিচয় ধীরেধীরে আত্মজনের বন্ধনে নিবিড় হয়েছে। ছুটির দিনে বা বিশেষ কোনো উপলক্ষ্যে বেলগাছিয়ার ফ্রেজার হোস্টেলে আগমন ঘটতো শক্তিদার। সঙ্গে অবধারিতভাবেই শ্বেত-শুভ্র ধুতি পাঞ্জাবিশোভিত পাহাড়িদা।
শক্তিদার উপস্থিতি মানেই একরাশ উৎসাহ নিয়ে নতুন কোনো ভাবনা বা কর্মসূচি উপস্থাপন ও সেসব বাস্তবায়নের পরিকল্পনা করা। শক্তিদা-পাহাড়িদা আসা মানে সেসময় হোস্টেলের ক্লান্তিকর দীনজীবনে একগুচ্ছ ভালোলাগা উপহার হিসেবে সঞ্চয় করা। সাক্ষরতা ও জনশিক্ষার নানা কর্মসূচিতে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলে অথবা ভিন্ রাজ্যে ছিল তাঁর প্রায় নিত্য যাওয়া আসা। এমনকি এই উপলক্ষ্যে বাংলাদেশ,শ্রীলঙ্কা সহ বিভিন্ন রাষ্টেও তিনি সফর করেছেন। সেইসব অভিজ্ঞতার কথাই শোনা যেত তাঁর কাছে। মুড়ি -বাদাম কখনো কখনো সিঙারা-তেলেভাজা, চা সহযোগে দীর্ঘ সময় ধরে চলতো আড্ডা;তার সাথে দেবাশিসদার আবেগমথিত কণ্ঠে রবীন্দ্র সঙ্গীত ও বাংলাদেশের বন্ধু মারুফ(পরবর্তীতে প্রয়াত)-এর প্রাণ উজাড় করা গান — আমরা যেন পোঁছে যেতাম অন্য এক জগতে!
শক্তিদার প্রণোদনাতেই আমরা অংশ নিয়েছি সাক্ষরতা প্রসারের নানা কর্মসূচিতে,সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে।এক সময়ে তাঁরই ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় ও উৎসাহে আমরা গড়ে তুলেছিলাম কাছের বন্ধু-প্রিয়জনদের মিলিত সংগঠন ‘সুহৃদ সম্মিলনী’। তাঁরই ভাবনায় প্রকাশিত হয়েছিল এই সংগঠনের স্মারক গ্রন্থ ‘সংবীক্ষণ’। আবার আমরা যখন রবীন্দ্র ভারতীর প্রাক্তন বন্ধু-সতীর্থদের সংগঠন ‘মরমি’ গড়েছি, তখন শক্তিদাকে পেয়েছি অগ্রজ অভিভাবক হিসেবেই। মনে পড়ে রাজাবাজারে রবীন্দ্রস্মৃতিধন্য ‘বেঙ্গল সোশাল সার্ভিস লিগ’ দপ্তরে যাওয়া এবং এই সংগঠনের প্রাণপুরুষ, দেশের জনশিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ শ্রদ্ধেয় সত্যন মৈত্রের সান্নিধ্যে আসার সুযোগ হয়েছিল শক্তিদার আগ্রহেই। সেই সুবাদেই সেখানে কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায়, চিত্রশিল্পী বিজন চৌধুরীর মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে সাক্ষরতা সংক্রান্ত কর্মশালায় উপস্থিত থাকার দুর্লভ সুযোগ হয়েছিল শক্তিদার সৌজন্যেই। এছাড়াও দেশ ও রাজ্যের বরেণ্য শিক্ষাবিদ,সাহিত্যিক, শিল্পীদের নিয়ে সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা সংক্রান্ত সম্মেলনে থাকারও সুযোগ হয়েছে কয়েকবার,যেগুলি জীবনের অন্যতম অভিজ্ঞতার সঞ্চয় হয়ে আছে।
শক্তিদাই এক সময়ে শিখিয়েছিলেন কীকরে নব্য সাক্ষর,স্বল্প সাক্ষর ও সীমিত শিক্ষিতদের জন্য সংবাদ প্রতিবেদন রচনা করতে হয়। মেদিনীপুরের প্রত্যন্ত এক গ্রামের কমিউনিস্ট পরিবারে জন্ম নেওয়া অফুরান প্রাণপ্রাচুর্য আর অভিজ্ঞতায় সমৃদ্ধ এই মানুষটি কমিউনিস্ট আন্দোলনের নানা আঁকাবাঁকা পথ অতিক্রম করেছেন,কারান্তরালে থেকেছেন এবং পরবর্তীকালে সাক্ষরতা ও জনশিক্ষার মতো গুরুত্বপূর্ণ মহতী কাজে নিজেকে সম্পৃক্ত করেছেন — যা ভাবলে বিস্ময় জাগে! নিরন্তর চর্চা,অধ্যবসায় ও আন্তরিক ইচ্ছার মিলনে যে একজনের মধ্যে মেধা ও সৃজনের অপরূপ উন্মেষ ঘটে এবং এই সন্মিলন যে একজনকে অনিন্দ্যসুন্দর করে গড়ে তুলতে পারে তারই অনুপম দৃষ্টান্ত যেন শক্তিদা। আশ্চর্যের বিষয়,বহু সময়ে তাঁর সঙ্গে কাটানোর অবকাশ হয়েছে,কিন্তু কখনো একমুহূর্তের জন্য তাকেঁ এতটুকু রুষ্ট হতে অথবা কারও প্রতি বিন্দুমাত্র অসূয়া প্রকাশ করতে দেখিনি। এটা নিঃসন্দেহে মানব চরিত্রের এক বিরল প্রকাশ বলেই মনে হয় !
শক্তিদা প্রতিনিয়ত সাংগঠনিক কাজে মগ্ন থেকেছেন।তারই ফাঁকে নিয়মিত লিখেছেন প্রবন্ধ,প্রতিবেদন,কবিতা,ছড়া, অনুগল্প ইত্যাদি। তবে সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা সংক্রান্ত রচনাগুলি ছিল সর্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ। যেগুলোর মধ্যে নিবিড় পাঠ,শিক্ষা,অভিজ্ঞতা ও গবেষণার চমকপ্রদ প্রতিফলন লক্ষণীয়। ইদানীং শক্তিদার সঙ্গে খুব একটা সাক্ষাৎ না হলেও দূরভাষের মাধ্যমে সংযোগ ছিল অটুট। তিনি সময়করে কুশল জানতে চাইতেন। বিশেষকরে করোনার ভয়াবহ সংক্রমণের আবহে ফোন করে সাবধানে থাকার পরামর্শ দিয়েছেন। দেশহিতৈষীর সঙ্গে ছিল তাঁর দীর্ঘদিনের সম্পর্ক। এখানে তিনি যেমন নিজে থেকে লেখা পাঠাতেন, তেমনি আমরাও মাঝেমাঝে লেখার জন্য অনুরোধ করতাম। তিনি সানন্দে সেই অনুরোধ রক্ষা করতেন। এছাড়াও আমার সম্পাদনায় বিভিন্ন স্মারক গ্রন্থেও তিনি তাঁর মূল্যবান রচনা পাঠিয়ে আমাদের সমৃদ্ধ করেছেন। শক্তিদার উদ্যোগেই গড়ে ওঠে ‘সত্যেন মৈত্র জনশিক্ষা সমিতি’। তিনি ছিলেন এই সংগঠনের সভাপতি। সেখানে যুক্ত ছিলেন তাঁরই দীর্ঘদিনের সহযাত্রী কল্যাণ শতপথি(প্রয়াত)। আরও অনেকের সাথে পাহাড়িদার মতো প্রবীণ মানুষকেও তিনি এই সংগঠনের বৃত্তে নিয়ে এসেছিলেন।
‘জনশিক্ষা ভাবনা’ এই সংগঠনের মুখপত্র–যা শক্তিদার ভাবনার উজ্জ্বল স্বাক্ষর বহন করছে। শক্তিদা বেশকিছু বই ও পুস্তিকা রচনা করেছেন। মাঝেমধ্যেই তিনি আমাকে বই ও নানা পত্রপত্রিকা পাঠাতেন। সম্প্রতি তিনি ফোনে বললেন,বিদ্যাসাগরের দ্বিশতবর্ষ উপলক্ষ্যে তিনি একটি গ্রন্থ রচনা করেছেন,সঙ্গে আরও একটি বই। যেদু’টি আমাকে পাঠাবেন। শুনে আমিও অধীর আগ্রহেই বই দু’টির প্রত্যাশায় ছিলাম। এছাড়া কথা হয়েছিল বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বিশ্বে জনশিক্ষা আন্দোলনের অন্যতম পথিকৃৎ ব্রাজিলের পাওলো ফ্রেইরির জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষ্যে দেশহিতৈষীর শারদ সংখ্যায় তিনি লিখবেন। কিন্তু তার আগেই তিনি চলে গেলেন না ফেরার দেশে! আজ মনে পড়ছে শক্তিদা দেশে সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য ‘ড. সুশীলা নায়ার লিটারেসি অ্যাওয়ার্ড ২০০৭-০৮’ অর্জন করেছিলেন। এই কৃতিত্বের জন্য তাঁকে পশ্চিমবঙ্গ গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘের পক্ষ থেকে ধর্মতলায় রাজ্য দপ্তরে সংবর্ধনা জানানো হয়েছিল। সেদিন অনেক বিদগ্ধ মানুষের উপস্থিতিতে শক্তিদার বক্তৃতা অনেকের স্মৃতিতে আজও অমলিন। গণতান্ত্রিক লেখক শিল্পী সঙ্ঘ ও এই সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক ইন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় সহ অনেকের সঙ্গেই শক্তিদার ছিল হার্দিক সম্পর্ক। বিভিন্ন সময়ে তিনি এই সংগঠনের কর্মসূচিতে উপস্থিত থেকেছেন,আবার ইন্দ্রদাকেও তাঁদের নানা অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ করে নিয়ে গেছেন।
শক্তিদা সাক্ষরতা ও জনশিক্ষা আন্দোলনের পাশাপাশি নানা সামাজিক ও গণ আন্দোলনে যুক্ত থেকেছেন। কেন্দ্রের সাম্প্রদায়িক বিজেপি সরকারের জনবিরোধী নীতি বিশেষকরে মানুষকে বিভাজিত করার লক্ষ্য নিয়ে এন আর সি, সিএএ, এনপিআর বিরোধী পদক্ষেপের বিরুদ্ধে আন্দোলনে তিনি পথে নেমেছেন এবং মানুষকে সংগঠিত করার উদ্দেশ্যে ‘নাগরিকপঞ্জি বিরোধী মঞ্চে’ শামিল হয়েছেন। আগেই উল্লেখিত হয়েছে,শক্তিদা সব সময়ই সৃষ্টির কাজে ব্যাপৃত থেকেছেন। মনে পড়ছে গতবছর লকডাউনের সময়ে গৃহবন্দিদশায় কেন্দ্রের শাসকদল ও সরকারের অবৈজ্ঞানিক ভাবনা ও অবিমৃশ্যকারি পদক্ষেপের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ ও শ্লেষ ব্যক্ত করে সামাজিক মাধ্যমে তুলে ধরেছিলেন অনবদ্য কবিতা—- ‘নতুন কত কী’, ‘দেবতার ত্রাস’; যেগুলির মধ্যে অন্ধ কুসংস্কারের বিরুদ্ধে বিজ্ঞানের জয়যাত্রার কথাই পরিস্ফুটিত হয়েছিল। সেই কবিতাগুলো পড়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলাম তাঁকে। খুবই খুশি হয়ে তিনি সে সময়ে রচনা করা কয়েকটি অনুগল্প পড়ার অনুরোধ করেছিলেন। সেগুলোও তাঁর বিচিত্র সৃজনশীলতাকেই মূর্ত করছে। করোনা আক্রান্ত হয়ে কিছুদিন ভরতি ছিলেন হাসপাতালে। ক্রমশ সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। সব সময় সৃষ্টির নেশায় মগ্ন মানুষটি ভেবেছিলেন হাসপাতালের বেডে শুধু শুধু শুয়ে না থেকে কিছু লেখালেখি করবেন। তাই খবর পাঠিয়েছিলেন পরদিন যেন বাড়ি থেকে কলম-কাগজ পৌঁছে দেওয়া হয় তাঁকে। সেইমতো পুত্র ও বৌমা (৬ মে) রওনা হয়েছিল হাসপাতালে। কিন্তু কী মর্মান্তিক সমাপতন! পথেই আসে দুঃসংবাদ! সেই কলম-কাগজ অধরাই রয়ে গেল! বাবাকে আর পৌঁছে দেওয়া গেলনা! নতুন কোনো সৃষ্টিও আর ডানা মেললো না! শক্তিদার শিক্ষা ও আদর্শেরই উজ্জ্বল উত্তরাধিকার বহন করছে তাঁর পুত্র ও কন্যা। ছেলেবেলার সেই দুরন্ত সুমু (সায়ন্তন) এখন জম্মুতে আই আই টি’র অধ্যাপক এবং কন্যা রিনি(সংকলিতা)জার্মানিতে অধ্যাপনায় রত।
প্রিয় শক্তিদার মতো একজন প্রাণবন্ত মানুষের আকস্মিক চিরবিদায়ের জন্য আমরা কেউই প্রস্তুত ছিলাম না। আরও অনেকের মতোই আমার কাছে এ যেন এক ব্যক্তিগত ক্ষতি। তাঁর প্রয়াণে আজ হৃদয় দিয়ে উপলব্ধি করতে পারছি মাও সে তুঙের সেই বিখ্যাত পঙ্ ক্তি —-“কোনো কোনো মৃত্যু ‘তাই’ পাহাড়ের চেয়েও ভারি”….. আমরা জানি সবাইকেই কালের নিয়মে জীবনের রঙ্গমঞ্চ ছেড়ে একদিন বিদায় নিতে হবে। কিন্তু শক্তিদার মতো এমন একজন বিরল প্রাণের শূন্যতা কি সহজে পূর্ণ হবে? আমি শক্তিদার অবিনাশী উজ্জ্বল স্মৃতির প্রতি জানাই অনন্ত শ্রদ্ধা এবং আত্মীয় পরিজনদের প্রতি জানাই আমার গভীর সমবেদনা।।