July 1, 2024

Technological Modernity of Music in the Present Era

LOKOGANDHAR ISSN : 2582-2705
Indigenous Art & Culture

Dr Pratiti Pramanik De, Dept of Music, Gobardanga Hindu College, Contact no 9433308120

Since its inception, the media has been established as one of the tools for advancing society and the collective advancement of modernity worldwide. In the era of contemporary globalization, mass media’s scope has peaked.  It is a powerful means of communication but not an option.  The evolution of technology has greatly enhanced the mass media.  Mass society has made people active at every stage of development, from mass culture to the information society.  The music industry is growing at a rapid pace today. As we embrace the digital revolution, it has become easier to promote music and deliver it to people.  With the development and upgradation of new technologies, the music industry has maintained a strong threshold worldwide.  Its impact is not only due to the variety of genres but also the range of variations that exist across the globe.  The Internet has become the ultimate medium for entertainment.  Artificial intelligence has been growing in importance over the last five years.  A useful application of AI is in mixing or mastering.  People’s aesthetic views differ depending on the use of technology.  Therefore, technology continues to play an active role in the path of social people.

Keywords – mass media, globalization, information technology, digital revolution,  internet upgradation,  artificial intelligence.  

     

বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে সঙ্গীতের প্রযুক্তিগত আধুনিকতা

ডঃ  প্রতীতি প্রামাণিক দে, সঙ্গীত বিভাগ,  গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ, দূরভাষ – ৯৪৩৩৩০৮১২০

সংক্ষিপ্তসার – জন্মলগ্ন থেকেই গণমাধ্যম সারা পৃথিবীতে সমাজের উন্নতিসাধনে এবং আধুনিকতার ছোঁয়ায় সম্মিলিতভাবে এগিয়ে চলার জন্য অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমকালীন বিশ্বায়নের যুগে গণমাধ্যমের ব্যপ্তি শিখরে পৌঁছেছে। এটি জ্ঞাপনের শক্তিশালী মাধ্যম হলেও নির্বিকল্প নয়। প্রযুক্তির ক্রমবিবর্তন ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটিয়েছে। গণসমাজ, গণসংস্কৃতি থেকে তথ্যসমাজ পর্যন্ত বিকাশের সবস্তরেই গণমাধ্যম জনগণকে প্রত্যেকটি পর্যায়ে সক্রিয় করে তুলেছে। সঙ্গীতশিল্প আজ দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি পাচ্ছে। ডিজিটাল বিপ্লবকে আলিঙ্গন করার সাথে সাথে সঙ্গীতের অগ্রগতি ও সেগুলি মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া আরও সহজ হয়ে উঠেছে। নতুন প্রযুক্তির বিকাশ ও আপগ্রেডেশনের সাথে সাথে সঙ্গীতশিল্প বিশ্বব্যপী একটি শক্তিশালী threshhold ধরে রেখেছে। এর প্রভাব শুধুমাত্র জেনারের বৈচিত্র্যের কারণে নয়, সারাবিশ্বে যে পরিসরের বৈচিত্র্য রয়েছে তার কারণেও। বিনোদনের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট চূড়ান্ত মাধ্যম হয়ে উঠেছে। বিগত পাঁচ বছর ধরে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ( Artificial Intelligence) তাৎপর্য বাড়ছে। AI এর সার্থক প্রয়োগ ঘটেছে মিক্সিং/ মাস্টারিং-এ। মানুষের নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য নির্ভর করে প্রযুক্তির ব্যবহারের উপর। তাই সামাজিক মানুষের পথপরিক্রমায় প্রযুক্তি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে।

সূচক শব্দ – গণমাধ্যম, বিশ্বায়ন, জ্ঞাপন, ডিজিটাল বিপ্লব, ইন্টারনেট, আপগ্রেডেশন, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা।

               জন্মলগ্ন থেকেই গণমাধ্যম সারা পৃথিবীতে সমাজের উন্নতিসাধনে এবং আধুনিকতার ছোঁয়ায় সম্মিলিতভাবে এগিয়ে চলার জন্য অন্যতম হাতিয়ার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সমকালীন বিশ্বায়নের যুগে গণমাধ্যমের ব্যপ্তি শিখরে পৌঁছেছে। বর্তমানে বিশ্বায়নের যুগে গণমাধ্যমে পাঠক, শ্রোতা বা দর্শক হিসাবে গোটা বিশ্বের জনগণকে একমাত্রিক ( single dimensional) বিচার করা হলেও, বস্তুত গণমাধ্যম- সম্প্রচারিত বার্তার গ্রহণ কোন অবস্থা বা পরিপ্রেক্ষিতেই একমাত্রিক তলে অবস্থান করতে পারে না। সাম্প্রতিক মহাজাগতিক গণমাধ্যমগুলির এই আধিপত্যবাদ আসলে মানুষের স্বাধীন জ্ঞাপনের উদ্দেশ্যকেই সমূলে বিনষ্ট করেছে। জ্ঞাপনে জ্ঞাপনকারী ও গ্রহীতা সমমর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত। এই পর্যায়ে গণজ্ঞাপনের ব্যক্তিমাধ্যম, আন্তঃ ব্যক্তিমাধ্যম ছাড়াও গণমাধ্যমের প্রয়োজন হয়। গণমাধ্যমের কাজ হল শুধুই বার্তার প্রসার ঘটানো। এই প্রসার নির্ভর করে জনগণের বা গ্রহীতাসমূহের ভৌগোলিক ও সামাজিক অবস্থানের উপর। আমাদের অতিপরিচিত গণমাধ্যমও মানুষের তৈরি ও মানুষের ব্যবহার্য।  গণমাধ্যম জ্ঞাপনের শক্তিশালি মাধ্যম হলেও নির্বিকল্প নয়। প্রযুক্তির ক্রমবিবর্তন ব্যাপকভাবে গণমাধ্যমের বিকাশ ঘটিয়েছে। এই গণমাধ্যম (বিশেষত বৈদ্যুতিন গণমাধ্যম) আজ বিশ্বের প্রত্যন্ত অঞ্চলে প্রসারিত হয়েছে। গণসমাজ, গণসংস্কৃতি থেকে তথ্যসমাজ পর্যন্ত বিকাশের সবস্তরেই গণমাধ্যম জনগণকে প্রত্যেকটি পর্যায়ে সক্রিয় করে তুলেছে।

           মাধ্যম বলতে বিভিন্ন পর্যায়কে বোঝায়। যেমন – লিখিত বা মুদ্রণ (print media) এবং broadcast মাধ্যম। এর প্রকারগুলি হল – সাংবাদিকতা, সামাজিক মাধ্যম, ছায়াছবি, দূরদর্শন, বিজ্ঞাপন, জনসংযোগ, audio media (বেতার, community radio, podcast) Interactive media যেমন website, video games, digital advertisement, ইত্যাদি। বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও উল্লেখযোগ্য ঘটনা গণমাধ্যমের অভ্যুত্থান ও বিস্তৃতি। বাঙালির জীবনযাত্রার সাথে গণমাধ্যমের যোগাযোগ বৃদ্ধি পেয়েছে বিভিন্ন সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক বাস্তবতায়। ১৮১৮ সালে প্রথম সংবাদপত্র প্রকাশিত হয়। গণমাধ্যম ও তথ্যপ্রযুক্তির মূলত একটি সূক্ষ্ম পার্থক্য লক্ষ্য করা যায়। গণমাধ্যম বলতে বিভিন্ন যোগাযোগ মাধ্যমকে বোঝায় যা বৃহৎ শ্রোতাদের কাছে পৌছয়। তথ্যপ্রযুক্তি বা ICT তথ্যপ্রেরণ, সংরক্ষণ ও গ্রহণ করতে ব্যবহৃত প্রযুক্তি ও সরঞ্জামগুলিকে বোঝায়। তবে একথাও ধ্রুব সত্য গণমাধ্যম তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। 

       গণমাধ্যম জনগণের উপর প্রবল প্রভাব বিস্তার করতে সক্ষম। মূলত দুটি বিষয় এখানে বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয় –১) গণমাধ্যম সরাসরি সত্যের বা বাস্তবের প্রতিফলন ঘটায় না, বরং ঘটনাকে শোধন করে পরিবেশন করে।

২) যে বিষয়গুলি গণমাধ্যম সম্প্রচার করে সেগুলি অন্যান্য বিষয়ের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়।

বানাড কোহেন (১৯৬৩) বলেছেন জনগণ কী চিন্তা করবে এ বিষয়ে গণমাধ্যম সর্বক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না কিন্তু জনগণ কোন বিষয়ে চিন্তা করবে এ বিষয়টি গণমাধ্যম নির্দিষ্ট করতে পারে।

Sir Edward Tailor বলেছেন, “ Culture is that complex whole which includes knowledge, belief, art, morals, law, custom and any other capabilities and habits acquired by man as a member of society.” ( গণজ্ঞাপন, গণসমাজ ও গণসংস্কৃতি , চট্টোপাধ্যায় পার্থ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, আগস্ট ২০১২, পৃষ্ঠা – ২৪৯)।

          শিল্পের মধ্যে সর্বোৎকৃষ্ট শিল্প হল সঙ্গীতশিল্প। মানুষের সাঙ্গীতিক বুদ্ধিমত্তার সৃষ্টিলগ্ন থেকে যদি অনুধাবন করা যায় দেখা যায় প্রাচীন মিশরীয়রা তারযুক্ত যন্ত্র বা তন্ত্রবাদ্য (বীণা, লিরস, ল্যুট), বায়ুযন্ত্র বা সুষির বাদ্য (ডবল ক্ল্যারিওনেট) ইত্যাদি নির্মাণ করেছিল। বাইবেলে পাইপ, লিয়ার, বীণা, ব্যাগপাইপ, ট্রাম্পেটের ব্যবহার দেখা যায়। মধ্যযুগে সঙ্গীতে স্বরলিপি ব্যবহার করা হত সরল সুরের রেকর্ড তৈরি করতে। রেনেসাঁ যুগের মুদ্রণ যন্ত্রের হওয়া শীট সঙ্গীত ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়। ধ্রুপদী যুগে বিটোভেন তাঁর সিম্ফনীতে অর্কেস্ট্রার ব্যবহার করেন। ঊনিশ শতকে আসে স্যাক্সোফোন, ইউফোনিয়াম, করণেটের মতো কিছু নতুন ধরণের বাদ্যযন্ত্র।

          বিংশ শতকের শুরুর দিকে গ্রামাফোন রেকর্ডের উদ্ভাবন হয় (১৮৯২), রেডিও সম্প্রচারণ শুরু হয় (১৯১৯-২০), গান শোনার ক্ষেত্রে যেগুলি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল। এসময় কিছু বৈদ্যুতিক প্রযুক্তিরও আবির্ভাব ঘটে। Electromagnetic pickup, amplifier, loudspeaker, electric piano(১৯২৯), electric guitar(১৯৩১),  electric bass(১৯৩৫), synthesizer(১৯৪৭) ইত্যাদি।  

           সোশ্যাল মিডিয়া বহু সঙ্গীতকে ভাইরাল হতে সাহায্য করেছে। অনেক শিল্পীকে ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম ইত্যাদি প্ল্যাটফর্ম থেকে আবিষ্কার করতে সাহায্য করেছে। জেড জেনারেশান রেডিও, টিভির পরিবর্তে নতুন নতুন সঙ্গীত আবিষ্কারের হাতিয়ার হিসাবে সোশ্যাল মিডিয়াকে বেশী পছন্দ করছে। প্রযুক্তি বিবর্তনের সাথে সাথে সমান ছন্দে এগিয়ে চলেছে। ভিনাইল, টেপ, রেডিও, থেকে শুরু করে সিডি, স্ট্রিমিং, এবং বিগত পাঁচ বছর ধরে সঙ্গীতের ক্ষেত্রে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার তাৎপর্য বেড়েছে।

            বর্তমানে AI (Artificial Intelligence) বা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে আলোড়ন তুঙ্গে। একটি শক্তিশালী প্রযুক্তি বা software যা মানুষের মত একইভাবে কাজগুলি পরিচালনা এবং সম্পাদনা করতে পারে। এটি এমন একটি উদ্ভাবনী ক্ষমতা যা সাধারণের কল্পনার অতীত। সুর তৈরি থেকে শুরু করে কন্ঠে বিভিন্ন সঙ্গীতের প্রকাশ সবকিছুই এই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা ঘটানো সম্ভব। আরোও একটি ক্ষেত্রে যেখানে AI এর সার্থক প্রয়গ হয়েছে তা হল Mixing / Mastering। Mixing মূলত একটি গানের একাধিক উপাদানকে একত্রিত করে প্রকাশ করে। AI ভিত্তিক Mixing toolগুলি audio বিশ্লেষণ করে এবং ব্যবহারকারীর set করা settingsএর উপর ভিত্তি করে সঠিক সমাধান করে । Music Industryতে AI এর সম্পৃক্ততা উদ্বিগ্নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিল্পীদের কন্ঠস্বর ব্যবহার করে ড্রেকের AI Track তৈরি করা হচ্ছে। ইতিমধ্যে বর্তমান সঙ্গীত থেকে Voice Data ব্যবহার করে নতুন গান তৈরি করতে পারবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর ফলে সঙ্গীত সংরক্ষণের অসুবিধা দেখা দিতে পারে। আমরা যে সঙ্গীতগুলি সোশ্যাল মিডিয়াতে শুনি তা আমাদের স্ট্রিমিং মিউজিক অ্যাপ দ্বারা নির্বাচন করি। কারণ এটি বাইরের অবস্থা ও বর্তমান কার্যকলাপের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। ম্যাককিন্সির গবেষণা অনুসারে ২০৩০ সালের মধ্যে ৭০% সংস্থা কমপক্ষে একটি AI প্রযুক্তি ব্যবহার করবে।

            AI ডিভাইস প্রত্যেকের জন্য স্বল্প খরচে পেশাদার শব্দযুক্ত সঙ্গীত নির্বাচনকে সহজ করে তুলেছে। Sportify এখন AI ব্যবহার করে ২০০০০ নতুন গানের মাধ্যমে সাজাতে সাহায্য করেছে। নিম্নে কয়েকটি AI progrmme সম্পর্কে আলোচনা করা হল –

  1. Phonic Mind –  সর্বশ্রেষ্ঠ অপসারণের জন্য ব্যবহৃত। চারটি vocal ট্র্যাক পাওয়া যায়। vocal,   drams, base এবং karaoke track তৈরি করতে ব্যবহার করা হয়।
  2. Magenta – Google TensorFlow ভিত্তিক প্রকল্প যা নতুন মডেলের সঙ্গীত নির্মাণে সাহায্য করে।
  3. LANDR – এই Audio masterimg programmmeটি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়োগ করে যাতে ব্যবহারকারী রেকর্ডিং আয়ত্ত করতে পারে।
  4. Boomy – একটি উল্লেখযোগ্য AI Software যেটি নির্বাচিত ঘরানার উপর ভিত্তি করে সঙ্গীত নির্মাণে দক্ষ। বাদ্যযন্ত্র যোগ করতে বা অপসারণ করতে, টেম্পো ও ভলিউম পরিবর্তন এবং গান তৈরি করার পূর্বে প্রয়োজন মত সম্পাদনা করতে এর ব্যবহার অত্যন্ত উল্লেখযোগ্য।
  5. Pictory – ভিডিও সম্পাদনা ও উৎপাদন প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করতে সাহায্য করে। AAWs বা ডিজিটাল অডিও workstation সঙ্গীত উৎপাদনকে অনেক সহজলভ্য করে তুলেছে। Virtual studio settings এ সঙ্গীতজ্ঞদের সঙ্গীত রচনা , রেকর্ড, সম্পাদনা করতে সক্ষম।
  6. AAWs –  ডিজিটাল অডিও workstation সঙ্গীত উৎপাদনকে অনেক সহজলভ্য করে তুলেছে। Virtual studio settings এ সঙ্গীতজ্ঞদের সঙ্গীত রচনা , রেকর্ড, সম্পাদনা করতে সক্ষম।
  7. DAW – সঙ্গীতজ্ঞরা শব্দ নিয়ে পরীক্ষা করতে পারেন ও বিভিন্ন ধরণের জেনার অন্বেষণ করতে পারেন কয়েকটি মাউস ক্লিকের মাধ্যমে।

           প্রযুক্তি যেভাবে সঙ্গীত উৎপাদনকে প্রভাবিত করে সৃজনশীল প্রক্রিয়ার মৌলিক পরিবর্তন এনেছে শৈল্পিক অভিব্যক্তির জন্য নতুন প্ল্যাটফর্ম তৈরী করেছে তা এককথায় অনবদ্য।  তবে AI বিকাশের সাথে সাথে সঙ্গীতজ্ঞরা অপ্রচলিত হয়ে পড়বেন। কারণ AI মেশিনগুলি দ্রুতগতিতে উচ্চমানের সঙ্গীত নির্মাণ করে। বর্তমানে সঙ্গীত শিল্পের মধ্যে AI এর চারটি প্রধান অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। AI সঙ্গীত সৃষ্টি, অনুসন্ধান ও সুপারিশ, অটো ট্যাগিং ও AI মাস্টারিং। AI অ্যাপ্লিকেশনগুলি স্বয়ংক্রিয় লিরিক্স তৈরি করে, কর্ড তৈরি করে, এবং মিউজিক রেকর্ড করে। এককথায় বাস্তবজীবনে মিউজিশিয়ানদের থেকে অনেক দ্রুতগতিতে নতুন মিউজিক তৈরি করে। এর মধ্যে Alicia ও ORB composer অধিক ব্যবহৃত ও উল্লেখযোগ্য। 

           AI এর মাধ্যমে মিউজিক লাইব্রেরী থেকে ফাইল ফিল্টার করে কোন গান অনুসন্ধান করা যায় এবং বিকল্পটিকেও খুঁজে পাওয়া যায়। মানুষ প্রযুক্তি নির্ভর, সঙ্গীতশিল্প প্রযুক্তির বৈপ্লবিক সম্ভাবনার প্রমাণ হিসাবে কাজ করে। এটি সঙ্গীতের উৎপাদন, ব্যবহার ও প্রচারে বিপ্লব ঘটিয়ে সঙ্গীতশিল্পের প্রকৃতিকে মৌলিকভাবে পরিবর্তন করেছে, মানুষের আচার আচরণে, নীতি নৈতিকতায় পরিবর্তন এনেছে, সাংস্কৃতিক বিশ্বাস ও মূল্যবোধও আজকাল নির্ভর করে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর।

           বিগত শতাব্দীতে নাটকের সেট নির্মাণ পদ্ধতি বর্তমানের চেয়ে ভিন্ন। টিভি চ্যানেলের স্থান দখল করে নিচ্ছে ইউটিউব। আগে গান ছিল শোনার বিষয়, বর্তমানে মিউজিক ভিডিও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। মানুষের নান্দনিক দৃষ্টিভঙ্গির পার্থক্য নির্ভর করে প্রযুক্তির ব্যবহারের ওপর। সংস্কৃতিক, সমাজতাত্ত্বিক, রাজনৈতিক, ও অর্থনীতির ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন সংস্কৃতির সংজ্ঞায়নের চেষ্টা করা হয়েছে। সামাজিক মানুষের পথ পরিক্রমায় প্রযুক্তি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে। আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে গত শতাব্দীর স্থানীয় ব্যক্তি বর্তমানে গ্লোবাল মানুষে পরিণত হয়েছে।

              প্রযুক্তির প্রভাবে সঙ্গীত শিক্ষাব্যবস্থারও পরিবর্তন ঘটেছে। কোভিড পরিস্থিতি চলাকালীন আমরা অভ্যস্ত হয়ে গেছি অনলাইন ক্লাসে। Theoritical বা practical উভয় শিক্ষাই অনলাইনে করা যায়। ফলে প্রযুক্তির ব্যবহার করে বর্তমানে দেশে বিদেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে নিজের পছন্দমত সঙ্গীতের কোর্স করার প্রচলন হয়েছে। বিভিন্ন ট্র্যাক ব্যবহার করে সঙ্গীত গায়ন ও রেকর্ড করে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াতে তা ছড়িয়ে দেওয়ারও সুব্যবস্থা করে দিয়েছে এই প্রযুক্তি। বর্তমানে কোন বিষয় জানার জন্য সঙ্গীতের কথা, সুর,স্বরলিপি বা সুরকার, গীতিকার, কোন শিল্পী গেয়েছেন এরকম বহু তথ্য ইন্টারনেটের ওয়েবসাইট থেকে আমরা জেনে নিতে পারি। যদি ওয়েবসাইটে না পাওয়া যায় তাহলে ওয়েবসাইট সম্পর্কিত লিঙ্ক দেওয়া থাকে যার সাহায্যে দ্রুত সেই ওয়েবসাইটে গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করা যায়। কোনও কনফারেন্স বা ওয়েবিনারে আমরা সহজেই অনলাইনের মাধ্যমে  অংশগ্রহণ করতে পারি। ফলে দূর দূরান্তে না গিয়ে ঘরে বসেই দেশ বিদেশের নানা তথ্য সম্পর্কে অবগত হতে পারি। প্রযুক্তির সাহায্যে সদ্য প্রকাশিত e-book, blog বা article এর মাধ্যমে সারা বিশ্বের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে বিভিন্ন লেখা আবার ক্লাসরুমে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে visual learning, aural learning এর মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীদের অনেকাংশে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সম্ভবপর হয়েছে। শিক্ষাবিদরাও এইধরণের গবেষণার মাধ্যমে নিজেদের জ্ঞানভাণ্ডারের বৃদ্ধি ঘটাতে পারছেন। পরিশেষে বলা যায় বিজ্ঞানের তথা  আধুনিক প্রযুক্তির মাধ্যমে একদিকে কিছু মানুষের জীবিকানির্বাহের সমস্যা হলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এর কল্যাণে আমরা পৃথিবীতে ঘটে যাওয়া প্রত্যেকটি ঘটনার সাক্ষী থাকতে পারছি এবং নিজেদের জ্ঞানভাণ্ডারকে সমৃদ্ধ করতে পারছি।

সহায়ক গ্রন্থ

১। গণজ্ঞাপন, গণসমাজ ও গণসংস্কৃতি , চট্টোপাধ্যায় পার্থ, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ, আগস্ট ২০১২

২। Culture is that complex whole which includes knowledge, belief, art, morals, law, custom and any other capabilities and habits acquired by man as a member of society.”, Sir Edward Tailor.