A Popular Character in Folk Drama Puppets: Puppet Dance
Farjana Yasmin, PhD Research Scholar, Performing Arts (Dance), Sister Nivedita University, DG1/2, New Town, Action Area-1, New Town, Kolkata: 700156, West Bengal, India.
Puppetry, one of the oldest forms of theatre, plays a significant role in the folk dramas of Bengal, often referred to as “folk plays.” These performances are typically staged on small to medium-sized platforms, where puppeteers expertly bring human or animal puppets to life through skilful manipulation. In Bengal, puppetry has a rich tradition dating back nearly a thousand years, featuring various forms of puppets including wire, stick, braided, and shadow puppets. Each type has its own unique method of control, from the fine wires used in wire puppets to the hand manipulation of braided puppets, known locally as “Beniputul.”
Historically, puppet shows were a beloved form of entertainment in rural Bengal, captivating audiences of all ages with their ability to portray human emotions like joy, sorrow, and humour. The relatable expressions of the puppets resonated deeply with audiences from all social classes. Puppet performances were particularly popular at fairs and festivals, where the colourful puppets, often made from wood or straw, danced in sync with music, reflecting the morals and daily life of the community.
Globally, puppetry has deep roots, with traditions spanning from Europe to Asia. In Europe, Germany, Italy, and France were early practitioners of puppetry, while Egypt, China, Korea, Myanmar, and the Philippines have also preserved their unique forms of art. In modern Bengal, institutions like the Calcutta Puppet Theatre and People’s Theatre are dedicated to keeping this ancient tradition alive.
Despite its rich history, puppetry in Bengal is facing a decline, with modern civilization rendering it unfamiliar to younger generations. However, some artists continue to champion the art form, hoping for a revival. Platforms such as social media offer potential avenues for promoting puppet shows, breathing new life into this traditional form of entertainment. Puppetry not only entertains but also educates, offering valuable social and moral lessons, particularly for children.
As puppetry evolves, with performers even dressing as puppets to engage audiences, there is hope for a resurgence of this ancient art form. The fusion of traditional and contemporary techniques could revitalize puppetry, capturing the imagination of modern audiences.
Keywords: puppetry, folk drama, Bengal, traditional arts, cultural heritage.
লোকনাট্যের জনপ্রিয় একটি চরিত্র পুতুল : পুতুল নাচ
ফারজানা ইয়াসমিন, পিএইচডি রিসার্চ স্কলার, পারফর্মিং আর্টস (নৃত্য), সিস্টার নিবেদিতা ইউনিভার্সিটি, ডিজি ½, নিউ টাউন, অ্যাকশন এরিয়া-১, নিউ টাউন, কলকাতা: ৭০০১৫৬, পশ্চিমবঙ্গ, ভারত। farjanayasminmili@gmail.com
লোকনাট্যের জনপ্রিয় একটি চরিত্র পুতুল : পুতুল নাচ
সারসংক্ষেপ
লোকজীবনের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে মুখে মুখে রচিত এবং অভিনীত নাটককে সাধারণত লোকনাট্য বলা হয়। লোকনাট্যের একটি জনপ্রিয় চরিত্র হলো পুতুল। পুতুল নাটকের প্রাচীন রূপগুলির মধ্যে একটি।
বাংলার পুতুলনাচ লোকনাট্যের একটি প্রাচীন মাধ্যম, ইংরেজিতে যাকে বলা হয় পাপেট, পাপেট্রি, পাপেট শো বা পাপেট থিয়েটার। পাপেট শোর জন্য ছোট বা মাঝারি আকারের একটি মঞ্চ আবশ্যক। এক বা একাধিক ব্যক্তি তাদের হাতের নিপুণ কুশলতায় মানুষরূপী পুতুল বা প্রাণিরূপী পুতুল দিয়ে একটা গল্প তুলে ধরে।
পুতুলশিল্প হল নাটকীয় অভিব্যক্তির একটি রূপ যা নির্দিষ্ট পুতুল দ্বারা উপস্থাপিত হয়। বাংলার পুতুলনাচের প্রায় হাজার বছরের ঐতিহ্য রয়েছে।
পুতুল নাচে সাধারণত চার ধরনের দেখা যায়। তারের পুতুল, লাঠিপুতুল, বেণীপুতুল ও ছায়াপুতুল। তারের পুতুল সূক্ষ্ম তার বা সুতার সাহায্যে এবং লাঠিপুতুল লম্বা সরু লাঠির সাহায্যে নাচানো হয়; আর দুই বা ততোধিক পুতুল যখন একসঙ্গে বেঁধে হাত দিয়ে নাচানো হয় তখন তাকে বলে বেণীপুতুল।
গ্রামীণ শিশু-কিশোর ও সর্বস্তরের মানুষের কাছে পুতুল নাচ খুব জনপ্রিয় ছিল এক সময়।
যেকোনো গল্প বা কাহিনী অবলম্বনে পুতুলগুলি দর্শকদের সামনে উপস্থিত হয় বিভিন্ন চরিত্রে। চরিত্রানুযায়ী পোশাক-পরিচ্ছদে, রূপসজ্জায় পুতুলের অভিনয়। মানুষের মতোই পুতুলগুলি হাসি-কান্না, আনন্দ-বেদনা, রাগ-দুঃখ ইত্যাদির অভিনয় করে।ফলে পুতুলনাচ হয়ে ওঠে সবার কাছে খুব প্রিয়।
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পুতুলনাচ একটি পুরাতন শিল্পকলা হিসেবে পরিচিত। ইউরোপে পুতুলনাচের সবচেয়ে প্রাচীনতম ধারক জার্মানি। মধ্যযুগে ইতালিতে ‘পুলসিনেলো’ নামে আবির্ভাব ঘটে সুতা পাপেটের, ফ্রান্সে যার নতুন নাম হয় ‘পলসিনেল’। এছাড়াও মিশর, চীন, কোরিয়া, ফিলিপাইন, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং শ্রীলঙ্কায় পুরানো ও আধুনিক ধারার পুতুলনাচের অস্তিত্ব বিদ্যমান। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ক্যালকাটা পাপেট থিয়েটার, পিপলস থিয়েটার, ডলস থিয়েটার এবং বর্ধমান পাপেট থিয়েটার আধুনিক ধারায় পুতুলনাচের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে।
পুতুল খেলা শিশুদের কাছে উৎসবের মতো। মেয়ে পুতুলের সাথে ছেলে পুতুলের বিয়ে এ যেন গ্রাম বাংলার সাধারণ রূপ। আর তার সাথে যদি সেই জড় পুতুল নাচে, কথা বলে তাহলে ছোট থেকে বড় সবাই যেন তা মন্ত্রমুগ্ধের মতো অনুভব করে। বাংলার সংস্কৃতিতে বিনোদনে বড় মাধ্যম এটি। রাত জেগে পুতুল নাচ দেখতে গ্রামীণ মানুষ ভীড় করতো এই পুতুল নাচ-গানের আসরে।
পুতুল নাচের গল্পে তুলে ধরা হতো সে সময়ের মানুষের ধর্মকথা, নীতিকথা, সুখ–দুঃখ, রঙ্গরস, হাসি-ঠাট্টা ও নিত্যদিনের জীবনাচরণ। কাঠের পুতুল অথবা সোলা দিয়ে পুতুল তৈরী করে, সেটাতে রং তুলির আচড় দিয়ে, বিভিন্ন বর্ণিল সাজে সাজিয়ে বাদ্যযন্ত্রের সাথে তাল মিলিয়ে সুতা দিয়ে হেলিয়ে দুলিয়ে নাচায় এই পুতুল নাচের আসরে। আগেকার দিনে কোন মেলা বা উৎসব হলে সেখানে পুতুল নাচ/পাপেট শোয়ের আয়োজন করা হতো। তবে কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী এই পুতুল নাচ আজ প্রায় বিলুপ্তির তালিকায় নাম লিখিয়েছে।
আধুনিক সভ্যতায় নতুন প্রজন্মের কাছে পুতুল নাচ অনেকটা অপরিচিত। এখনো শিল্পীরা জীবন-জীবিকা ও রুজি-রোজগারের টানে এই শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন। আমি চাই গ্রামবাংলায় পুতুল নাচ আগের মতো ফিরে আসুক। সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য মিডিয়ায় পুতুল নাচের ভিডিও বেশি করে প্রচার করতে হবে। তাহলে একদিকে সামাজিক শিক্ষা অন্যদিকে শিশু মনের বিকাশ ঘটাতে পুতুল নাচ অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি । বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতার পণ্ডিতদের কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রমাণগুলি থেকে প্রমাণিত হয়েছে যে, পুতুলগুলি প্রায় সভ্যতার মতোই পুরানো। মূল পাপেট শো-এর প্রকৃতি যাই হোক না কেন, পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে মধ্যযুগ থেকে পুতুল শিল্প ইতিহাস জুড়ে বিনোদনের একটি জনপ্রিয় রূপ।
বর্তমানে পুতুল নাটিকা বিবর্তন হয়ে মানুষ নিজেই পুতুল সেজে নৃত্য করছে যা বর্তমান দর্শক অথবা জনসাধারণ মনোরঞ্জন, বিনোদন করছে এবং পুতুল নাচ আবারো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অর্থাৎ অতীতের পুতুল নাটিকা নতুনভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যেখানে মানুষ পুতুল সেজে পুতুল নাটিকার চরিত্র করছে ।
মূলশব্দ : পুতুল, লোকনাট্য ,বাংলার, নাটক ও নাচ।
লোকনাট্য : লোকজীবনের কাহিনীর উপর ভিত্তি করে মুখে মুখে রচিত এবং অভিনীত নাটককে সাধারণত লোকনাট্য বলা হয়।
পুতুল নাচ হলো থিয়েটার বা পারফরম্যান্সের একটি রূপ যেখানে পুতুলের মাধ্যমে কাহিনী বলা হয়।
পুতুল নাচ সাধারণত চার ধরনের দেখা যায়।
- তারের পুতুল,
- লাঠিপুতুল,
- বেণীপুতুল ও
- ছায়াপুতুল।
তারের পুতুল : তারের পুতুল নাচ ইংরেজী নাম ম্যারিয়োনেট বা স্ট্রিং পাপেট।তারের পুতুল সূক্ষ্ম তার বা সুতার সাহায্যে নাচানো হয়। পুতুল তৈরি হয় মূলত শোলা দিয়ে। উচ্চতা প্রায় ১ থেকে ৩ ফুট। পুতুলের কোমরে, হাতে ও মাথার সাথে তার বা সুতা বাঁধা থাকে যাতে আড়াল থেকে তা নিয়ন্ত্রণ করা যায়।নানা ধরনের কাজের জন্য একটি তারের পুতুল নাচের দলে ১০ থেকে ১৮ জন লোকশিল্পী, কলাকুশলী ও কর্মী থাকে।
ডাঙ্গের পুতুল বা লাঠি পুতুল : লাঠিপুতুল স্টেজের নীচের অংশ থেকে লম্বা সরু লাঠির সাহায্যে নাচানো হয়। একে ডাং বা ডাঙ্গের পুতুলও বলে। খড়, যজ্ঞডুমুর বা পিপুল গাছের কাঠ দিয়ে এ ধরনের পুতুল তৈরি হয়। লম্বায় এরা প্রায় পূর্ণবয়স্ক মানুষের সাইজের হয়। ভেলভেট কাপড়ে এদের সাজসজ্জা করা হয়।ডাঙ্গের পুতুল বা লাঠি পুতুল নাচের পুতুলগুলি কাঠের তৈরী। নীচ থেকে নাচটি পরিচালনা করা হয় কাঠ বা বাঁশের সাহায্যে।
বেণী পুতুল বা খেঁদি পুতুল : দুই বা ততোধিক পুতুল যখন একসঙ্গে বেঁধে হাত দিয়ে নাচানো হয় তখন তাকে বলে বেণীপুতুল। এ পুতুল বানানোর জন্য মাটির বা কাঠের বা থার্মোকলের মুখের ছাঁচ তৈরি করে তারপর পেপার ম্যাশের মুখ করা হয়। এ পুতুলের হাত সবসময় কাঠের হয়।
ছায়া পুতুল : ছায়া পুতুল শ্যাডো প্লে ,শ্যাডো পাপেট্রি নামেও পরিচিত , এটি গল্প বলার এবং বিনোদনের একটি প্রাচীন রূপ যা আলোর উৎস এবং একটি স্বচ্ছ পর্দা বা স্ক্রিনের মধ্যে ফ্ল্যাট আর্টিকুলেটেড কাট-আউট ফিগার (ছায়া পুতুল) ব্যবহার করে । পুতুলের কাট-আউট আকারে কখনও কখনও স্বচ্ছ রঙ বা অন্যান্য ধরণের বিবরণ অন্তর্ভুক্ত থাকে। পুতুল এবং আলোর উৎস উভয়ই সরানোর মাধ্যমে বিভিন্ন প্রভাব অর্জন করা যেতে পারে। একজন প্রতিভাবান পুতুলের মতো চিত্রগুলিকে হাঁটতে, নাচতে, লড়াই করতে, মাথা নাড়াতে এবং হাসতে দেখাতে পারে
পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে পুতুলনাচ একটি পুরাতন শিল্পকলা হিসেবে পরিচিত। ইউরোপে পুতুলনাচের সবচেয়ে প্রাচীনতম ধারক জার্মানি। মধ্যযুগে ইতালিতে ‘পুলসিনেলো’ নামে আবির্ভাব ঘটে সুতা পাপেটের, ফ্রান্সে যার নতুন নাম হয় ‘পলসিনেল’।এছাড়াও মিশর, চীন, কোরিয়া, ফিলিপাইন, মায়ানমার, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া এবং শ্রীলঙ্কায় পুরানো ও আধুনিক ধারার পুতুলনাচের অস্তিত্ব বিদ্যমান। ভারতের পশ্চিমবঙ্গে ক্যালকাটা পাপেট থিয়েটার, পিপলস থিয়েটার, ডলস থিয়েটার এবং বর্ধমান পাপেট থিয়েটার আধুনিক ধারায় পুতুলনাচের চর্চা চালিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে পুতুল নাচের ঐতিহ্য অনেক প্রাচীন। প্রাচীন বৃহত্তর বাংলার বিহার, ওড়িষ্যা, আসাম, ত্রিপুরা, মণিপুরের নদীতীরবর্তী জেলাগুলোতে পুতুল নাচের প্রচলন ছিলো। আর্যরা যখন বঙ্গদেশে এলো সেসময় অবিভক্ত বাংলার পূর্ব অংশকে গৌড় বলা হতো আর দক্ষিণ বঙ্গকে বলা হতো সমতট। দক্ষিণবঙ্গের বিস্তার বাংলাদেশের বাকেরগঞ্জ থেকে শুরু করে হুগলি নদীর পূর্বতট সুন্দরবন পর্যন্ত। এই ভৌগলিক সীমানার মধ্যে বাংলার পুতুল নাট্যপালার চর্চা ছিলো। এটাই ছিলো সনাতন পুতুল শিল্পীদের আদি ভূখন্ড। এসব অঞ্চলে পুতুল তৈরির পর্যাপ্ত উপকরণ, উপযুক্ত কারিগরি জ্ঞান, নদী নালার পথে যাতায়াত সহজলভ্য হওয়ায় পুতুল শিল্পচর্চা গড়ে উঠেছিলো বলে ধারণা করা হয়।
পুতুল খেলা শিশুদের কাছে উৎসবের মতো। মেয়ে পুতুলের সাথে ছেলে পুতুলের বিয়ে এ যেন গ্রাম বাংলার সাধারণ রূপ। আর তার সাথে যদি সেই জড় পুতুল নাচে, কথা বলে তাহলে ছোট থেকে বড় সবাই যেন তা মন্ত্রমুগ্ধের মতো অনুভব করে। বাংলার সংস্কৃতিতে বিনোদনে বড় মাধ্যম এটি। রাত জেগে পুতুল নাচ দেখতে গ্রামীণ মানুষ ভীড় করতো এই পুতুল নাচ-গানের আসরে।
এক সময় পেশাজীবী পুতুল-নাচিয়ে দল গ্রামে-গঞ্জে পুতুলনাচ প্রদর্শন করতো এবং তারাই বংশপরম্পরায় ঐতিহ্যবাহী এই শিল্পমাধ্যমটিকে বাঁচিয়ে রাখে। বিভিন্ন মেলা ও লোক উৎসব-অনুষ্ঠানে পুতুল নাচের আসর বসে। এটি লোকমনোরঞ্জনের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। পুতুল নাচ,গ্রামবাংলার প্রাচীন ঐতিহ্য ছিলো । গানের তালে তালে ঐতিহ্য এবং কাহিনীর সাথে বাদ্ধযন্ত্র ও সুরের মোর্ছনায় পুতুলের নৃত্য। গ্রামীণ শিশু-কিশোর ও সর্বস্তরের মানুষের কাছে খুব জনপ্রিয় ছিল এক সময়।
পুতুল নাচের গল্পে তুলে ধরা হতো সে সময়ের মানুষের ধর্মকথা, নীতিকথা, সুখ–দুঃখ, রঙ্গরস, হাসি-ঠাট্টা ও নিত্যদিনের জীবনাচরণ। কাঠের পুতুল অথবা সোলা দিয়ে পুতুল তৈরী করে, সেটাতে রং তুলির আচড় দিয়ে, বিভিন্ন বর্ণিল সাজে সাজিয়ে বাদ্যযন্ত্রের সাথে তাল মিলিয়ে সুতা দিয়ে হেলিয়ে দুলিয়ে নাচায় এই পুতুল নাচের আসরে। তবে কালের বিবর্তনে ঐতিহ্যবাহী এই পুতুল নাচ আজ প্রায় বিলুপ্তির তালিকায় নাম লিখিয়েছে।
বর্তমানে সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রচারিত পুতুল নাচ
বাংলাদেশে আমি যখন প্রত্যয় ইংলিশ মিডিয়ামে শিক্ষকতা করতাম,তখন বেশ কয়েকবার আমরা কয়েকজন শিক্ষক মিলে পুতুল নাচের, নাটিকার আয়োজন করেছিলাম।ফলে ছাত্রছাত্রীরা পুতুল নাচ সম্পর্কে জানতে পেরেছিলো ও অনেক উপভোগ করেছিলো।
বাংলাদেশের বিখ্যাত নৃত্যশিল্পী শামীম আরা নিপা তার শিক্ষার্থীদের পুতুলের মতো সাজিয়ে পুতুল নাচ করিয়েছেন,দর্শক মুগ্ধ হয়ে মানুষের আদলে পুতুল নাচ উপভোগ করেছিলো।
বাংলাদেশে সাম্প্রতিক কালে পুতুলের আদলে শিশুদের নাচ সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে।যারফলে অনেকে পুতুল নাচ সম্পর্কে জানতে পেরেছে।
গত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরের সূর্যমুখী কিন্ডার গার্টেন এন্ড উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় শিশু শিক্ষার্থীদের দিয়ে পুতুলের আদলে অসাধারণ নৃত্য প্রদর্শন করা হয়। যা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে। অনুষ্ঠানে স্কুলের শিশু শিক্ষার্থীরা পায়ের আঙ্গুলের সাথে হাতে সূতো বেঁধে, মাথায় ঘোমটা দিয়ে ও গায়ে বাঙ্গালীয়ানা পোশাক পরিধান করে নাচ প্রদর্শন করে।
সুতরাং দেখা যাচ্ছে যে,আধুনিক সভ্যতায় নতুন প্রজন্মের কাছে পুতুল নাচ অনেকটা অপরিচিত হলেও মানুষের আদলে পুতুল নাচ দেখে সবাই মুগ্ধ হচ্ছে। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির জাঁতাকলে পড়ে, ঘরে ঘরে অত্যাধুনিক মোবাইল হাতের নাগালে আসায় গ্রামবাংলার সুপ্রাচীন ঐতিহ্য পুতুল নাচ হারিয়ে যেতে বসেছে। এখনো শিল্পীরা জীবন-জীবিকা ও রুজি-রোজগারের টানে এই শিল্পটাকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।আমি চাই গ্রামবাংলায় পুতুল নাচ আগের মতো ফিরে আসুক। সেজন্য সোশ্যাল মিডিয়া ও অন্যান্য মিডিয়ায় পুতুল নাচের ভিডিও আরো বেশি করে প্রচার করতে হবে।তাহলে একদিকে সামাজিক শিক্ষা অন্যদিকে শিশু মনের বিকাশ ঘটাতে পুতুল নাচ অনবদ্য ভূমিকা পালন করবে বলে আমি মনে করি । বর্তমানে পুতুল নাটিকা বিবর্তন হয়ে মানুষ নিজেই পুতুল সেজে নৃত্য করছে যা বর্তমান দর্শক অথবা জনসাধারণ মনোরঞ্জন, বিনোদন করছে এবং পুতুল নাচ আবারো জনপ্রিয় হয়ে উঠছে অর্থাৎ অতীতের পুতুল নাটিকা নতুনভাবে প্রকাশ পাচ্ছে যেখানে মানুষ পুতুল সেজে পুতুল নাটিকার চরিত্র করছে।
মূল পাপেট শো-এর প্রকৃতি যাই হোক না কেন, পৃথিবীর বিভিন্ন অংশে, বিশেষ করে মধ্যযুগ থেকে পুতুল শিল্প ইতিহাস জুড়ে বিনোদনের একটি জনপ্রিয় রূপ। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে বাংলার ঐহিত্য লোকসংস্কৃতির অংশ এই পুতুল নাচ যাতে হারিয়ে না যায় সেজন্য এ পুতুল নাচ ধরে রাখতে সরকার ও বিভিন্ন সংগঠনকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানাই।