বনসাই
ডঃ আশিস চক্রবর্ত্তী
আমার এই লেখাটা শুধু লিখতে হবে বলে লিখছি তা একদম ই নয়। এটার পেছনে আমার একটা ব্যাক্তিগত তাগিদ আছে, তাই এক রকম দায়িত্ববোধ থেকেই কলম ধরলাম বলতে পারেন। প্রেক্ষাপট – সমাজ আর বিষয়টা সঙ্গীত কেন্দ্রীক হলেও লক্ষ্যটা মানুষের জীবনের মৌলিক চাওয়া পাওয়ার দিকেই ইশারা করছে। এতে কিছু প্রশ্ন আছে, কিছু আর্জি আছে, সবই বাস্তবতার নিরীখে। আর কি আছে বা নেই সেটা না হয় আপনারাই বিচার করবেন। তবে এতটকু বলে রাখি যে লেখার মধ্যে যা উল্লেখিত হবে তা একান্তভাবেই আমার জীবন ও ব্যাক্তিগত বোধ দিয়ে অনুভূত।
আমরা সঙ্গীত শুনি, দেখি, অনুভব করি, আনন্দ করি, উল্লাসে ভেসে যাই, ডুবে যাই কোনো ব্যথার দ্যোতানায়, অথবা হয়ত আরও অনেক কিছু কিন্তু এগুলো শুধুই কিছুমাত্র বিশেষ সময়ে বিশেষ অনুভুতির বহিঃপ্রকাশ। বাস্তব জীবনের চাওয়া পাওয়া এদের বেশীক্ষন বাঁচতে দেয় না, দিলে হয়ত এই লেখাটার দরকার ই হত না। বাস্তবতা অন্য কথা বলে । শুনতে হয়ত অদ্ভুত শোনাচ্ছে। আমি হঠাৎই বা সঙ্গীত কে টেনে আনলাম কেন আর খামোখা সঙ্গীত অবাস্তব ই বা হতে যাবে কেন । কারণ আছে, একটু ভেঙ্গে বললেই বোঝা যাবে।
সংগীত অবাস্তব বা অলীক কখনই নয় , বরঞ্চ আমাদের মানুষ হবার পরিচয় পত্র । তবে এ সমাজ তাকে কতটা বা কিভাবে জায়গা করে দিয়েছে অথবা তাকে ঘিরে বেঁচে থাকা মানুষগুলোকে সমাজ কোন স্তরে বা কিভাবে গ্রহণ করেছে – করে চলেছে এই লেখা তার ই একটা ব্যবচ্ছেদিক সমীক্ষা বলা যেতে পারে। আমি নিজে একজন সংগীতপ্রিয় মানুষ এবং আমার সাধনা, গবেষণা, জীবিকা এই বিষয়টি কে কেন্দ্র করেই। বিগত চল্লিশ বছর ধরে আমি এই বিষয়টির সাথে যুক্ত এবং এর নিরীখে সমাজে জীবন অতিবাহীত করে চলেছি । খুব কাছ থেকে, কাছের হয়ে দেখেছি এর চড়াই উৎরাই, কমনীয়তা, কঠোরতা ইত্যাদি আরও অনেক কিছু। তার ই খানিকটা এই লেখার মাধ্যমে তুলে ধরার চেষ্টা করলাম।
আমরা ছাত্রাবস্থা থেকে একটা বিষয় কে ঘিরে স্বপ্ন দেখি নিজের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলবার জন্য এবং আশা রাখি সেটাই আমার বাঁচার অবলম্বন হবে মানসিক, শারীরিক, অর্থনৈতিক এবং সামাজিক দিক থেকে। এমনটাই হওয়ার কথা যদি সেই বিষয় কে কেন্দ্র করে নিজের মেধা,আবেগ এবং জীবিকা সংস্থান একই পঙক্তিতে উচ্চগ্রামে বিরাজ করে। এক্ষেত্রে তৃতীয় বিন্দু অর্থাৎ জীবিকা সংস্থান ব্যাপারটি এতটাই গুরুত্ব রাখে যে তাকে ছাড়া অদূর ভবিষ্যতে মেধা ও আবেগের রসকদম্বদ্বয় শুষ্ক জীবাশ্মে পরিণত হতে বেশী সময় নেয় না।
এবার আসি সংগীতের কথায়। নিজগুণে এই বিষয়টি এক অতি উচ্চ দর্শন বলে পরিগণিত। এর আবার অনেকগুলো বিভাগ আছে। আমি পাশ্চাত্য সংগীতের কথা বলছিনা, ও নিয়ে আমার তেমন মাথাব্যাথা নেই- এবং তা বিষয়োপযোগী ও নয়। আমি বলছি ঊচ্চাংগ, লঘূ ও লোক সংগীতের কথা। এ সংগীত আমাদের উপমহাদেশের অধিকাংশ মানুষের জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ । অর্থাৎ আবেগের খামতিটি কোথাও চোখে পড়ে না। আর মেধা? সংগীত যেখানে রক্তের সাথে বহমান সেখানে আলাদা করে সে প্রশ্ন ওঠে না বলেই আমার মনে হয়। তবে ব্যাতিক্রম সদা সর্বদা আছে, থাকবে, সে কথায় যাচ্ছি না। আমরা আমাদের সাংগীতিক ঐতিহ্য নিয়ে গর্ব বোধ করি। সুতরাং কোন ছাত্র বা ছাত্রী যদি এই বিষয়টি কে জীবিকা করতে চায় এবং তার প্রতিভা ও ভালবাসা যদি তাকে সেটা করতে অনুমতি দেয় তবে তা কোন গর্হিত কাজ কি? নিশ্চয় ই নয়। যে স্বাধীনতা টা অন্যান্য বিষয় নিয়ে জীবিকা সন্ধিৎষু হতে গেলে বা পড়াশোনার ক্ষেত্রে তদ্কেন্দ্রীক বিষয় চয়নে ছাত্রছাত্রীদের থাকে, সেটা এক্ষেত্রেও হওয়া উচিৎ। কিন্তু এখানেই গোল বাধে। বাধ সাধেন শুভানুধ্যায়ীরা। উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে, এ বিষয় চয়নে যথেষ্ট ঝুঁকি আছে যে। এ কথা মিথ্যা তো নয় বরং যথেষ্ট তাৎপর্যপূ্র্ণ। কারণ জীবিকার সহজলভ্যতা যেখানে অনিশ্চয়তাপূ্র্ণ সেখানে শুধু আবেগ বা ভালবাসার ভিত্তিতে বিষয় চয়ন করা অবশ্যই বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
এবার দেখা যাক সংগীতের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের সম্ভাব্য উপায়গুলো কী কী হতে পারে । প্রধাণতঃ দুটি উপায় আছে। প্রথমতঃ শিক্ষকতা এবং দ্বিতীয়তঃ অনুষ্ঠানে নিজের প্রতিভা প্রদর্শণ ও দর্শক মনোরঞ্জন। প্রথমটি অর্থাৎ শিক্ষকতা দু’ রকমের হয় ১ গৃহ কেন্দ্রীক ও ২ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীক। অনেক ক্ষেত্রে এই দুটোই একসাথে চলে বা চলতে পারে অন্যান্য বিষয়ের মত । কিন্তু শুধু গৃহ শিক্ষকতায় নিকট বা সুদূর ভবিষ্যতে জিবীকা সুরক্ষা কোথায় ? এর ভুমিকা অনেকটা পজিটিভ ক্যাটালিস্টের মতো – যৌগিক ভাবে উপার্জন বাড়ায় কিন্তু একা হয়ে গেলে ঠঁুটো জগন্নাথ। কিন্তু যদি প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষণ হয় সে ক্ষেত্রে অবশ্য জীবিকা সুরক্ষা বেশ খানিকটা নিশ্চিন্ততা প্রদানে সক্ষম যদি প্রতিষ্ঠানটি সরকারী হয়ে থাকে। যদি তা না হয় তবে সেই চাকুরীজীবির ভাগ্য নির্ভর করে মালিক পক্ষের মর্জি বা মুনাফার ওপর। এখানে আরও কিছু ব্যাপার থেকে যায়। অধিকাংশ বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক – শিক্ষিকার মাসিক বেতন সহ আন্যান্য সুযোগ সুবিধা সরকারী নিয়মের তোয়াক্কা করে না অথচ কাজ আদায় করে নেয় আঠারো আনা । না হলে চাকরী নট্ । এ যেন ট্রাপিজের খেলা, ধারালো অস্ত্রের ওপর দিয়ে পদসঞ্চারণ, একটু এদিক ওদিক হলেই, আশা, ভরসা, স্বপ্ন, পরিবার সব রাস্তার ফুটপাতে – তখন ডিগ্রীর কাগজ মুড়ে বাদাম বেচ। কেউ দাম দেবেনা আপনার বিনিদ্র রাতগুলোর, যেগুলো কেটেছে বইয়ে মুখ গুঁজে – পরীক্ষায় ভাল ফল করার আশায় অথবা ঘেমে নেয়ে রেয়াজ করে ডাঁকসাইটে শিল্পী হওয়ার তাগিদে। এ ছাড়াও কিছু অলিখিত অবমাননা তো আছেই যদি প্রতিষ্ঠানটি ললিত কলা কেন্দ্র না হয়ে কোন বেসরকারি বিদ্যাপীঠ হয়ে থাকে। যেমন আপনার পদমর্যাদা সর্বোচ্চ তকমা ধারী অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষকদের নিচেই থাকবে এবং বেতনও সেই অনুপাতেই থাকবে। আর আপনি নিজের বিষয়ে যতই পণ্ডিত হোন না কেন অথবা আপনার কন্ঠের সুর আর হাতের গতি যারপরনাই মুনশিয়ানা ও দক্ষতার সঙ্গে যন্ত্রের ওপর যতই তুফান তুলুক না কেন আপনার পরিচয়ের গায়ে একটা প্রছন্ন অবহেলা যোগ করা থাকবে – আপনি ‘ মিউজিক টিচার’। অতএব জ্ঞান গঞ্জে আপনি ব্রাত্য । এসব আরও কত কি । প্রতিবাদ যদি ভাষার আকারে কর্তৃপক্ষের কানে পৌঁছায় তবে আপনার স্থান যথারীতি পূণঃ মূষিক ভব। অতএব সুরক্ষা কোথায় ? একটা সোজা সাপটা বৈষম্য এখানে খুব সহজেই বোধগম্য হয় । সংগীতের শিক্ষক – শিক্ষীকা রা এসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অন্যান্য বিষয়ের শিক্ষক – শিক্ষীকাদের থেকে কিছু কম নন বরঞ্চ কয়েক ধাপ এগিয়েই বলা যেতে পারে কারণ শাস্ত্রীয় এবং ব্যাবহারিক দু’ দিকই তাদের সমান পরিশ্রমের বিনিময়ে আয়ত্ত্ব করতে হয়। আরও একটি বড় ব্যাপার হোলো যে শুধু পরিশ্রমের বিনিময়ে এ বিষয় কে আয়ত্ত্ব করা অসম্ভব। হয়তো সবাই আমার সাথে একমত হবেন না কিন্তু যারা এই বিষয়টি কে নিয়ে একটু আধটুও চর্চা করেছেন আমি নিশ্চিৎ তারা এটিকে হৃদয়ঙ্গম করতে সমর্থ হবেন । সংগীত কোন বিষয় নয় । এটি আসলে , আভ্যন্তরীণ নান্দনীক অনুভুতিকে প্রকাশ করার এক পন্থা , । এই বহিঃপ্রকাশের রাস্তা অবশ্য আরও আছে – যেমন কেউ চিত্রকলা, কেউ ভাস্কর্য, কেউ বা সাহিত্যের মাধ্যমে একে প্রকাশ করে আনন্দ পান। সেই ভাবেই কারো মধ্যে যদি মৌলিক সাংগীতিক দক্ষতা ও অনুরাগ থাকে তবে তিনি তার মাধ্যমেই বহিঃপ্রকাশের আনন্দ উপভোগ করেন।
এবার আসি এর ব্যাবহারিক দিক অর্থাৎ মঞ্চ প্রদর্শনের দিকটি তে। এই ব্যাপারটা আমার মতে অনেক বেশি অনিশ্চয়তা পূর্ণ। একজন মঞ্চ প্রদর্শনকারী কে দক্ষ হতে গেলে অন্ততঃ পনেরো কুড়ি বছর ধরে অক্লান্ত প্রচেষ্টার সাথে বাদন, গায়ন বা নৃ্ত্য অভ্যাস করে যেতে হয় যাকে চলতি ভাষায় রেয়াজ বলে। তারপর চলে তার মঞ্চ দখলের লড়াই বা প্রতিযোগিতা । বড়ো নিষ্ঠুর ও নির্মম এই অধ্যায়। এখানে সবাই এক একটা মুখোশের আড়ালে থেকে লড়াই করে। সত্যবাদিতা, আদর্শবাদ এখানে বন্যার জলে খড় কুটোর মত ভেসে যায় । আগেকার দিনে যদিও এমনটা ছিলো না , কিন্তু এখন এটাই সত্যি। অনেক কিছুই এখানে আর বললাম না। এত করেও বাজারে টিকে থেকে পয়সা রোজগার করাটা একটা জুয়া খেলার মতো। এখানে অন্য মেধা কাজে আসে, রেয়াজ নয়। তাহলে সুরক্ষা কোথায়। আর এই যে এতগুলো বছর ধরে নিরলস প্রয়াস, ততদিন সেই ব্যাক্তির রসদদার কে হবে ? যদি পিতৃদত্ত জমানো পূঁজি থাকে ভালো না হলে অন্য রাস্তা যেমন চাকুরীরতা স্ত্রী, অথবা পর্যাপ্ত অবকাশ যুক্ত মতা বেতনের সাংগীতিক জীবিকা যেটা রেয়াজে কোন প্রভাব ফেলবে না কিংবা কোন বিদেশিনীর সাথে পরিণয় এবং তার সুবাদে বিদেশের গ্রীন কার্ড পেয়ে পরবাসী। আশাকরি রাস্তা গুলো থেকেই বুঝতে পারছেন শতকরা কতজনের অদৃষ্টে তা জোটে । বাকীরা কি তাহলে হরিমটর চিবোবে ? তাহলে সুরক্ষা কোথায় ?
ফি বছর শয়ে শয়ে হাজারে হাজারে ছাত্র ছাত্রীরা কত স্বপ্ন নিয়ে ভর্তি হয় সংগীত মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে। পাশ করে বেরোনোর পর সামনে প্রকট হয় শুধু অনিশ্চয়তা। সব স্বপ্ন জমে থেকে থেকে দীর্ঘশ্বাসে পরিণত হয়ে শরীর ত্যাগ করে। এ যেন এক কদর্য হত্যালীলা। প্রতিবছর এই মহাবিদ্যালয় বা বিশ্ববিদ্যালয় গুলো এক বিপুল পরিমান শিক্ষিত বেকার উৎপাদন করে বাজারে ছাড়ে । এদের ভবিষ্যৎ কি ? কে বলে দেবে ? কে নেবে এদের দায়িত্ব ? কোথায় এদের জন্য জিবীকা সংস্থান ? কোথায় এ শিল্পের ভবিষ্যৎ ? তা হলে কি কেউ রক্ত জল করা সংগীতাভ্যাস করে শেষে মাদার ডেয়ারির দুধ অথবা শস্তা মিলের থান বেচবে ? না কি সারা জীবন চটাস চটাস চপ্পলে আওয়াজ তুলে মাসে তিনশ টাকা পারিশ্রমিক আর আধকাপ দ্বিফুটিত বা ত্রিফুটিত খয়েরী সড় পড়া চা আর দুটো মারী বিস্কুটের আমদানির আশায় ছাত্র বাড়ীতে পোঁ পোঁ সুর আর ধাঁই ধপাধপ তবলা বাজিয়ে ঘর্মাক্ত কলেবরে ঘরে ফিরে হাতল ভাঙ্গা চেয়ারে ধপাস্ করে বসে দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাববে জীবনে কত বড়ো ভূল সে করেছে !
ভাবতে হবে । এরা আমাদের ই সন্তান , আমাদের ই ভাই – বোন । এ সমাজ আমরা ই তৈরী করেছি । ভূল যদি কোথাও থেকে থাকে তার দায়ীত্ব আমরা এড়াতে পারিনা। শোধরাতে ও আমাদের ই হবে । একটা আমূল পরিবর্তন দরকার আমাদের শিক্ষা ব্যবস্থার। এ শিক্ষা আমাদের, এ ঐতিহ্য আমাদের । একে আমাদের ই বাঁচাতে হবে। আরেকটা রেনেসাঁ প্রয়োজন । সংগীত আমাদের জীবনের প্রত্যেকটা বিষয়, প্রত্যেকটা পরিচ্ছদে জড়িয়ে আছে । তবে তার শিক্ষণ এভাবে কেন মাঠে মারা যাবে ? যে শিক্ষাব্যবস্থা আমাদের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে তা আমাদের নয় । আমাদের শিকড় অন্য, কৃষ্টি অন্য, মানসিকতা ভিন্ন। এ আমাদের সমাজ ব্যবস্থার সাথে কিছুতেই খাপ খায় না। সংগীত সহ সমস্ত ললিতকলার বিষয় শিক্ষার শুরু থেকেই অবহেলিত । একটা কথা ভাবুন তো, বিদ্যালয়ে অন্য সব বিষয়ের যে ভাবে পরীক্ষা নেওয়া বা নম্বর দানের ব্যবস্থা আছে সংগীতের ক্ষেত্রে তা আছে কি ? অন্য সব বিষয়ের যে ভাবে ক্যারিয়ার কাউন্সিলিং হয় , সংগীতের ক্ষেত্রে তা হয় কি? টেকনিক্যাল বিষয়ের যে ভাবে মহাবিদ্যালয় গুলিতে ক্যম্পাসিং হয়, সংগীতে সেটা হয় ? না হয় না । তার কারণ জীবিকার অপ্রাচুর্যতা । ইচ্ছে করে একটা বিশাল মহীরুহ কে বনসাই বানিয়ে রাখা হয়েছে। আর সেই অবস্থার সাথে আমরা অতি অলস ভাবে নিজেদের মানিয়ে নিচ্ছি, নিয়েছি। যেটা কে আমরা অসম্ভব ভাবছি সেটা বিদেশের অনেক দেশ সম্ভব করে দেখিয়েছে ।তবে আমরা ইচ্ছে করে নিজেদের পিছিয়ে রাখছি কেন। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কে কি জবাব দেব ? ভেবেছেন ? আমাদের সংস্কৃতি হারিয়ে যাচ্ছে , আর সংস্কৃতি ছাড়া আমাদের জাতির অস্তিত্ব কোথায় ?
একজন সংগীত অনুরাগী হিসাবে এই কথাগুলো আমার তুলে ধরা কর্তব্য , তাই করলাম । এই লেখাটার মাধ্যমে একজন ও পাঠক বন্ধু যদি এ ভাবে ভাবতে সমর্থ হন , তবে জানবো এ লেখা সার্থক । জানবো আমার আবেগ, আমার ভালবাসা একটা সার্থক রূপ পেল । না হলে জেগে ঘুমানো মানুষদের ডাস্টবিনে পড়ে থেকে হাঁস ফাঁস করা এ শব্দগুলোর একরকম অভ্যাস হয়ে গেছে ।