Globalization, Contemporary Film and Literature
Dr. Pratiti Pramanik De
Gobardanga Hindu College
Music Dept.
Abstract
Globalization is an international situation that emerged in the late 20th century in which the world’s investment, employment, production and marketing systems have spread beyond national borders to the domestic sphere. It is a method of creating traditional activities and interconnections that initiate coordination and interaction between government institutions and peoples of different nations. The driving force behind this approach is international trade and investment and its main enabler is information technology. Western thought, literature, visual arts, drama etc. were transmitted through colonial rule. In particular, this interaction of the West with the ancient civilization of India gave a dynamic to our intellectual practice and artistic thinking.Currently, the flight of urbanization is high in Bengali films. The context of Bengali films has now moved from the country to abroad in and the thoughts and clothes have a touch of modernity.
Key notes – Globalization, Information technology, Bengali films, Modernity.
বিশ্বায়ন, সমসাময়িক চলচ্চিত্র ও সাহিত্য
ড. প্রতীতি প্রামানিক দে
১
বিশ্বায়ন বিংশ শতকের শেষভাগে উদ্ভূত এমন একটি আন্তর্জাতিক অবস্থা যাতে পৃথিবীর বিনিয়োগ কর্মসংস্থান, উৎপাদন ও বিপণন ব্যবস্থা দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে অন্তর্দেশীয় পরিসরে পরিব্যাপ্তি লাভ করেছে।
এটি পারম্পরিক ক্রিয়া ও আন্তঃসংযোগ সৃষ্টিকারী এমন একটি পদ্ধতি যা বিভিন্ন জাতির সরকারি প্রতিষ্ঠান ও জনগণের মধ্যে সমন্বয় ও মিথস্ক্রিয়ার সূচনা করে। এই পদ্ধতির চালিকাশক্তি হলো আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ এবং এর প্রধান সহায়িকা হল তথ্যপ্রযুক্তি। প্রযুক্তির অস্বাভাবিক স্ফীতি বর্তমান জীবনপ্রবাহকে সম্পূর্ণ পরিবর্তন করে দিয়েছে।যত নেতিবাচক পরিণতির কথা বলা হোক না কেন এটুকু স্বীকার করতেই হবে প্রযুক্তির কল্যানেই গোটা পৃথিবী আজ আমাদের হাতের মুঠোয়। ঔপনিবেশিক শাসনের মাধ্যমে পশ্চিমের চিন্তা, সাহিত্য, দৃশ্যকলা, নাট্যধারা প্রভৃতি সঞ্চারিত হয়। বিশেষতঃ ভারতবর্ষের প্রাচীন সভ্যতার সঙ্গে পশ্চিমের এই আদানপ্রদান আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চা ও শিল্পভাবনায় একটি গতিশীলতা প্রদান করে। সাম্প্রতিক শিল্পের গতিধারা পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে সূচনাকালে শিল্পীরা ব্যাপকভাবে দেশের শিল্প ঐতিহ্যকে জানার চেষ্টা করেছেন।
বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্রে নগরায়নের উড়ান উচ্চশীল। বাংলা ছবির প্রেক্ষাপট এখন শহরের ধোঁয়া-ধুলো মাখা রাস্তায় বিশ্বায়নের হাওয়ায় দেশ থেকে বিদেশ পর্যন্ত পাড়ি দিয়েছে, পোশাক-আশাকেও আছে আধুনিকতার ছোঁয়া। ঋতুপর্ণ ঘোষ, অপর্ণা সেন, গৌতম ঘোষ, অঞ্জন দত্ত প্রমুখরা বেশ কয়েক বছর ধরে বাংলা চলচ্চিত্রের ঐতিহ্যকে নতুনভাবে নিয়ে এসেছেন দর্শকদের সামনে। বর্তমানে কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায়, শিবপ্রসাদ মুখার্জী ও নন্দিতা রায়, অনিক দত্ত, অনিরুদ্ধ রায়চৌধুরী কোথাও বাংলার শহর ও গ্রামের ভিন্ন বাণিজ্যিক বিভাজিকাটি মুছে ফেলেছেন। টেকনোলজি দুরস্ত, বিশ্বায়নের প্রাসাদপুষ্ট চৌখস বাঙালি প্রতিনিয়ত ভুলে চলেছে ফিল্মের শিল্পভাষা। প্যারিসের সিনেমা থেকে স্কেচ বুকটি ভারতের চিত্রকারগণের হাতে এসে পৌঁছেছে। সত্যজিৎ রায়ের মতে বাংলা বা ভারতীয় সিনেমায় যাঁরা একের পর এক ছবি করে চলেছেন তাঁদের শিল্পগ্রহনের মনটা মূলতঃ ‘সাহিত্যিক মন চিত্রগত মন নয়’। কিন্তু আসলে শক্তিমান পরিচালকের প্রধান গুন হল বাক্যের সাহায্য না নিয়েও দৃশ্যকে বাঙময় করে তোলা। বিশ্বায়নের যুগে সাউন্ড টেকনোলজি নিয়ে নির্মিত ‘শব্দ’ ও বিশ্বজুড়ে বিলুপ্তির পথে একক পর্দার প্রেক্ষাপটের পরিবর্তে স্থান করে নেয়া মাল্টিপ্লেক্স-এই ঘটনাকে নিয়ে নির্মিত ‘সিনেমাওলা’ চলচ্চিত্র দুটিতে পরিচালক কৌশিক গাঙ্গুলি বাণিজ্যিক দিক থেকে বিশ্বায়নের প্রভাবটি খুব সুব্দরভাবে তুলে ধরেছেন দর্শকের সামনে।
বস্তুত দৃশ্য ও শব্দ — এই দুই ইমেজের সমন্বয়েই তৈরি হয় চলচ্চিত্রের ভাষা ও নন্দনভাবনা।নন্দনতত্ত্ব দর্শন হলেও তা শিল্পসম্মন্ধীয় চিন্তাভাবনা, সত্তরের দশকের শেষভাগে পশ্চিমবঙ্গ সরকার বেশ কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করেছিলেন বাংলা চলচ্চিত্রের উন্নতিকল্পে। ইউরোপের এককালের সিনেমায় সচরাচর ব্যবহৃত জটিল চলচ্চিত্র কৌশল যেমন জাম্পকাট ভয়েস ওভার ন্যারেশন ফ্ল্যাশ ব্যাক ফ্ল্যাশ ফরওয়ার্ড ইত্যাদি দেখা গিয়েছে সিনেমায়। বর্তমান চিত্রকাররা সিনেমা-প্রযুক্তি বিষয়ে অনেক বেশি সচেতন। উত্তর আধুনিকতাবাদী অথচ তাঁদের নির্মিত চলচ্চিত্রগুলি বাণিজ্যিক পুঁজিকে সমৃদ্ধ করেছে ঠিকই, কোথাও কোথাও ভাষানির্মানশৈলীর দিক থেকে হয়ে উঠেছে অন্তঃসারশূন্য। তবে একথাও সত্য যে বিশ্বায়নের ফলে সিনেমাটোগ্রাফি ও চলচ্চিত্রের নন্দনতত্ত্ব অনেক বেশি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে দর্শকদের কাছে।
সূচক শব্দ :- বিশ্বায়ন, তথ্যপ্রযুক্তি, শিল্পভাবনা, আধুনিকতা, চলচ্চিত্র, নন্দনতত্ত্ব, সাহিত্যিক মন, সিনেমা-প্রযুক্তি, বাণিজ্যিক পুঁজি, ভাষানির্মানশৈলী, সিনেমাটোগ্রাফি।
ড. প্রতীতি প্রামানিক দে, সঙ্গীত বিভাগ, গোবরডাঙা হিন্দু কলেজ, দূরভাস :- ৯৪৩৩৩০৮১২০