July 1, 2024

Efforts to Progression in Tagore Song

LOKOGANDHAR ISSN : 2582-2705
Indigenous Art & Culture

Priyanka Bhattacharjee

Rabindranath Tagore’s songs, known as “Rabindra Sangeet,” are a seminal part of Bengali culture and have left an indelible mark on Indian music and literature. Efforts to progress and evolve Rabindra Sangeet have been multifaceted, encompassing academic research, modernization of musical arrangements, and innovative performances. This abstract explores the various dimensions of these efforts. Firstly, academic work has played a crucial role in preserving and propagating Tagore’s musical legacy. Researchers have meticulously catalogued his songs, analyzing their lyrical and musical composition to understand their deeper philosophical, spiritual, and cultural contexts. This scholarly foundation has ensured that Tagore’s songs remain relevant and accessible to future generations. Secondly, musicians and composers have strived to modernize Rabindra Sangeet without compromising its essence. This includes incorporating contemporary instruments, experimenting with fusion genres, and reinterpreting traditional melodies to appeal to younger audiences. These efforts have revitalized Tagore’s songs, making them resonate with contemporary listeners while retaining their original charm and profundity. Lastly, innovative performances and digital platforms have expanded the reach of Rabindra Sangeet globally. Artists are leveraging social media, streaming services, and virtual concerts to bring Tagore’s music to a broader audience. Collaborations between artists from diverse musical backgrounds have also introduced Rabindra Sangeet to international listeners, fostering cross-cultural appreciation and dialogue. In conclusion, the progression of Rabindra Sangeet is marked by a delicate balance between preservation and innovation. Academic research, modernization of musical arrangements, and the use of digital platforms are pivotal in ensuring that Tagore’s songs continue to inspire and captivate audiences worldwide. These efforts not only honour the legacy of Rabindranath Tagore but also ensure that his musical genius continues to evolve and flourish in the contemporary era.

রবীন্দ্রগানে উত্তরণের প্রয়াস, প্রিয়াংকা ভট্টাচার্য্য (Priyanka Bhattacharjee)

হোয়াটস এ্যাপ +৯১৮২৭৪৯২৫১৫০, Email: priyanka1995.bd@gmail.com

‘উত্তরণ’ শব্দটির আভিধানিক অর্থসন্ধান করতে গিয়ে সংসদ অভিধানে উল্লেখ পাওয়া যায় – “উত্তরণ –

১ পার হাওয়া (প্রধানত নদী সাগর প্ৰভৃতি)।

২ পৌঁছানো

৩ ওপরে ওঠা, নিচের দিক থেকে ওপরে ওঠা

৪ পরীক্ষায় সাফল্য [উৎ+ তৃ + অন]”

এতে শব্দটির অর্থ স্পষ্ট; কিন্তু, কোথাও যেন শব্দটির অর্থ সুস্পষ্ট অনুভূত হয়না। যে কোনো বাক্যে সুষ্ঠু প্রয়োগের জন্য যেমনি শব্দের পদ সম্বন্ধে জ্ঞান থাকা প্রয়োজন, ঠিক তেমনি প্রয়োজন যথার্থ অর্থবোধের। এই অর্থবোধের বিদ্যা কি শুধুমাত্র হাতে কলমের শিক্ষা, জ্ঞান, তথাকথিত শিক্ষিত সমাজের আধুনিক শিক্ষা থেকে সত্যিই লাভ করা যায়! আমাদের জীবনের চারপাশের চিত্রগুলো কি তাই বলে! মননশীল হৃদয় ব্যতীত শুধুমাত্র মেধাশীল বুদ্ধিবৃত্তিতে কি ‘উত্তরণ’ শব্দটির প্রকৃত অনুভূতি-উপলব্ধির মধ্য দিয়ে জারিত হওয়া যায়!  

একথা বললে বোধ হয় ভুল হবে না যে, ‘উত্তরণ’ শব্দটির অর্থবোধের জন্য জীবনের পথে উত্তরণই একমাত্র ও অনন্য পথ; যে উপলদ্ধি রবীন্দ্রনাথের গানে আমরা প্রত্যেক মুহূর্তে উদ্ভাবন করতে পারি। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের বহুবিধ চড়াই-উতরাই এর মধ্যে ‘দুঃখ চেতনার বোধ’-কে সাঙ্গ করেছিলেন নিজেকে রচনা করে তুলবার পথ হিসাবে। কিন্তু, এই দুঃখবোধ কোথাও দমিয়ে দিতে পারেনি তাঁকে, বরং উদ্বুদ্ধ করেছে নবোত্তর জীবনচেতনায় উত্তীর্ণ হতে, জীবনের প্রত্যেক পদক্ষেপে দুঃখ, অশান্তি, ক্ষুদ্রতা, কলুষতা, হতাশা, সংকীর্ণতা এ সকল বোধেকে জয় করার যে আকুতি, এই তো উত্তরণের পথ, যে প্রয়াস আমরা তাঁর গানে খুঁজে পাই প্রতিনিয়ত।

একজন বাঙালি কবি, একাধারে সংগীতস্রষ্টা, ঔপন্যাসিক, প্রবন্ধকার, ছোটগল্পকার, নাট্যকার তথাপি চিত্রকর হয়েও রবীন্দ্রনাথ তাঁর সমগ্র প্রকাশভঙ্গিতে বিভিন্ন ভাবে জীবনের পথে উত্তরণ দেখিয়েছেন; তাঁর জীবন-শিক্ষা, দর্শন; প্রস্ফূটিত তাঁর সমস্ত রচনায় – এ কথা নিশ্চয়ই ইতিপূর্বে আলোচনার বিষয়বস্তু হয়েছে; অতএব এই কথাগুচ্ছ, রবীন্দ্রনাথ তাঁর গানের মধ্য দিয়ে জীবনের পথে উত্তরণের যে প্রয়াস করে গেছেন আমৃত্যু, তাঁর সেই উপলব্ধ সত্যের মধ্যে দিয়ে আমার উপলব্ধিতার রস জারিত হয়ে একটি সংক্ষিপ্ত প্রতিবেদন উপস্থাপন করার চেষ্টা করলামমাত্র।

ডঃ অরুণ কুমার বসু, রবীন্দ্রনাথের সংগীত-দর্শন ও সংগীত-ভাবনা প্রবন্ধে বলছেন,

“অন্তত সংগীতের ক্ষেত্রে তিনি এক যোগে হতে পেরেছিলেন সংগীতকার ও সংগীত ভাষ্যকার”

এই উক্তির সত্যতায় কমবেশি আমরা সকলেই অবগত। তাঁর সকল সৃষ্ট সংগীতের মধ্য দিয়ে তিনি তাঁর চেতনার, ভাবধারার একটি চিত্র সবসময়ই আমাদের সামনে তুলে ধরতে চেয়েছেন, আর আমরা আমাদের আত্মপোলব্ধির মধ্য দিয়ে, আত্মচেতনার রং মিশিয়ে আজও সেই চিত্র ফুটিয়ে তুলতে চেষ্টা করছি অবিরল।

অখন্ড গীতবিতানে সংকলিত ভূমিকা গানে যদি শুরু করা যায় –

‘প্রথম যুগের উদয়দিগঙ্গনে,

প্রথম দিনের উষা নেমে এল যবে

প্রকাশপিয়াসি ধরিত্রী বনে বনে

শুধায়ে ফিরিল সুর খুঁজে পাবে কবে ।।’

উষাদেবী আবির্ভূতা হন আলোকের বাণীবহ হয়ে, পৃথিবীতে প্রথম ঊষার আগমনে উদ্ভাসিত ধরিত্রী অন্তরের উচ্ছাস প্রকাশের অনুকূল সুরের সন্ধানে ব্যাকুল হয়েছিল, সে সুর অভূতপূর্ব এক বিরহবেদনা জাগিয়ে তোলে, সংসার জনতার উর্ধ্বে সূর্যের একক অনন্য আবির্ভাব যেন কবির মনকে উদ্বেল করে তোলে।

“বহু জনতার মাঝে অপূর্ব একা ।

অবাক্ আলোর লিপি যে বহিয়া আনে

নিভৃত প্রহরে কবির চকিত প্রাণে,

নব পরিচয়ে বিরহব্যথা যে হানে।।”

গানটির শেষ অংশের এই পংক্তিগুলো সহসা যেন এক অন্য বার্তা বহন করে আনে ঊষার নতুন আলো জীবনের সকল পাত্র ভরিয়ে যখন নতুনভাবে বাঁচতে আশার সঞ্চার করছে, অপরদিকে তখনই ঊষার এক অন্যরূপ নিবিড়ভাবে কবিচক্ষে ধরা দিচ্ছে, এক অসামান্য নবপরিচয়ে। এ যেন ভূ-পরিমণ্ডলের আলোক উৎসের, একাকিত্ব নিয়েও জগৎ সংসারকে অপূর্ব রূপে আলোকিত করার সংবাদ দেয়। একাকিত্ব ছাপিয়ে উত্তরণেরএমন প্রাসঙ্গিক দৃষ্টান্ত যেন এর থেকে যথাযথ হতে পারে না। গীতবিতানের ভূমিকা গানটিতেই রবীন্দ্রনাথের সমগ্র গীতবিতানের চলচ্ছবি প্রকাশিত, যেখানে উত্তরণ একটি অনিবার্য প্রপঞ্চ হয়ে আমাদের সামনে ধরা দেয়। 

গীতবিতানে সংকলিত বিষয়ানুক্রমিক পর্যায়ভুক্ত গানগুলোর উপপর্যায়ের দিকে লক্ষ্য করলে দেখা যায়, তাঁর সকল দর্শন এপর্বে উপস্থিত, বিশেষ করে পূজা পর্যায়ের উপপর্যায়ের নামকরণের বিষয়টির উল্লেখ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়। পূজা পর্যায়ের উপপর্যায়গুলো (গান, বন্ধু, প্রার্থনা, বিরহ, সাধনা ও সংকল্প, দুঃখ, আশ্বাস, অন্তর্মুখে, আত্মবোধন, জাগরণ, নিঃসংশয়, সাধক, উৎসব, আনন্দ, বিশ্ব, বিবিধ, সুন্দর, বাউল, পথ, শেষ, পরিণয়) কবি মানসের জীবন-দর্শনের সকল ভাব সুনিপুণতার সাথে বহন করে চলেছে নানা বেশে, কিন্তু অদ্ভুতভাবে কোথাও ‘উত্তরণ’ শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায় না। কিন্তু, প্রায় সবগুলো উপপর্যায়ের গানেই আলাদা করে কিছু কিছু উত্তরণ প্রয়াস খুব সহজেই চোখে পড়ে।

অনুভূত হয়, জীবনের সব ক্ষেত্রে তিনি এই শব্দটিকে তাঁর পাথেয় করে চলেছেন, জীবনের ধর্মের মতো পালন করেছেন এর শর্তাবলী – “মুক্ত কারো হে সকল বন্ধ”; তাইতো তাঁর জীবনের সাথে ওতোপ্রতভাবে জড়িয়ে ছিল এ অনুভূতি, আলাদা কোনো শব্দের ভারে বা মাধুর্য্যে বা কোনো আশ্রয়ে এর উপলব্ধিকে তিনি বাঁধতে চাননি। বাস্তব গন্ডির মধ্যে, জীবন প্রক্রিয়ায় সকল বন্ধন থেকে মুক্ত করতে জীবনে উত্তরণই পথ নির্দেশ দেয় মানুষকে বাঁচার, তাই তাঁর লেখনিতে উত্তরণ নামের এই বীজ লুকিয়ে থেকে গেছে নিভৃতে। 

“কান্নাহাসির-দোল-দোলানো পৌষ-ফাগুনের পালা,

তারি মধ্যে চিরজীবন বইব গানের ডালা –

এই কি তোমার খুশি, আমায় তাই পরালে মালা

সুরের-গন্ধ-ঢালা? ।”

পূজা পর্যায়ের গান উপপর্যায়ের গানটিতে জীবনে পর্যায়ক্রমিক সুখ-দুঃখ হাসি-কান্নার মাঝে কবি তাঁর উপরে অর্পিত দায়িত্ব পালন করে চলেছেন খুশিমনে । এ গানেরই শেষ অংশের পংক্তিগুলোতে পাই,

                     “অশান্তি যে আঘাত করে তাই তো বীণা বাজে।

নিত্য রবে প্রাণ-পোড়ানো গানের আগুন জ্বালা –

এই কি তোমার খুশি, আমায় তাই পরালে মালা

      সুরের-গন্ধ-ঢালা? ।”

নিত্যদিনের কাজের মাঝে ব্যর্থতা আসে, এ ব্যর্থতাকে কবি জীবনেরই অঙ্গ মনে করেন, তিনি বিশ্বাস করেন এই ব্যর্থতাই মানুষের সফলতার সুপ্তরূপ, তাইতো তিনি অশান্তির আঘাতেই বিনা বাজাতে সক্ষম হোন । দুঃখ, আঘাত, অশান্তি এই উপলব্ধি গুলো সবসময়ই তাঁকে চলার পথে শক্তি জোগান দিয়েছে, দুঃখ বোধ চরম বলেই সৃষ্টির উম্মোচন তার প্রতিপদে অক্ষত, তাই তো তিনিই বলতে পারেন –

” সুখে আমায় রাখবে কেন, রাখো তোমার কোলে।

যাক-না গো সুখ জ্বলে।। “

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – প্রার্থনা, ক্রমিক সংখ্যা – ২১৬

তিনি বিশ্বাস করতেন, আঘাত’ই তাঁর শুদ্ধিকরণের একমাত্র পথ, এ পথেই তিনি ঈশ্বরের অনেক কাছে পৌঁছতে পারবেন । এ গানেরই সঞ্চারীতে তাঁর বাণী –

“যেখানে ঘর বাঁধব আমি আসে আসুক বান —

তুমি যদি ভাসাও মোরে চাইনে পরিত্রাণ “

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – প্রার্থনা, ক্রমিক সংখ্যা- ৯২

“আজ নিখিলের আনন্দ ধারায় ধুইয়ে দাও,

মনের কোনের সব দীনতা মলিনতা ধুইয়ে দাও।’’

কখনো আমরা অন্তর্নিহিত ভাবে উত্তরণ খুঁজে পাই তাঁর গানে কখনোবা স্পষ্টতা দেখতে পাই মনের কোনে জমে থাকা সকল মলিনতা, দীনতা থেকে নিজেকে মুক্ত করার তাঁর নিরন্তর প্রয়াসে। দীনতা, তুচ্ছতা, গ্লানি, সমস্ত কিছু ছাপিয়ে, মনের সকল সংকীর্ণতা থেকে মুক্ত করে দেওয়ার প্রার্থনা এই গান; মনের গহীনের অন্ধকার কুটির থেকে আলোর দিকে চাওয়ার প্রার্থনা এই গান।

এই বক্তব্য যেন আরো দৃঢ় হয় পরবর্তী গানটিতে, অন্তরের আমি অন্ধকার থেকে মুক্ত হতে চায় আলোর পানে ; সকল অস্বচ্ছতা, অস্পষ্টতার বন্ধন হতে প্রকাশ পেতে চায় পূর্ণতায়।

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – বিরহ, ক্রমিক সংখ্যা- ১৪৯

    “তোর    ভিতরে জাগিয়া কে যে,

তারে বাঁধনে রাখিলি বাঁধি ।

হায়    আলোর পিয়াসি সে যে

তাই   গুমরি উঠিছে কাঁদি ।। ”

মুক্তির যে তীব্র আকাঙ্খা তাই যেন উত্তরস্বরূপ সহজাত ভাবে আমরা পাই বিশ্ব উপপর্যায়ের পরবর্তী গানে —

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – বিশ্ব, ক্রমিক সংখ্যা- ৩৫৬

” আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া,

বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া ।। “

ক্ষুদ্র আমি, দেহজ অমিকে আত্মকেন্দ্রিকতা, অহং বোধ থেকে মুক্ত করে বিশ্বের সাথে এক করে পাওয়ার আহ্বান এ গান ।

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – সাধনা ও সংকল্প, ক্রমিক সংখ্যা- ১৮৩

“উড়িয়ে ধ্বজা অভ্রভেদী রথে

 – – – – – – – – – – – – – – – –

টান রে দিয়ে সকল চিত্তকায়া,

টান রে ছেড়ে তুচ্ছ প্রাণের মায়া,

চল রে টেনে আলোয় অন্ধকারে

  নগর-গ্রামে অরণ্যে পর্বতে ।। “

কবির ‘ সাধনা ও সংকল্প ‘ উপপর্যায়ে বিন্যস্তকরণই যেন বলে দিচ্ছে এ গানের ভাব । প্রাণের তুচ্ছ মায়া ছেড়ে জীবনপথে অঙ্গীকারবদ্ধ হতে বলছেন তিনি। আলো-অন্ধকার অর্থাৎ সুখ-দুঃখ অকথিত নিয়মের মতো জীবনকে বেষ্টন করে থাকে, তাতে যেন থেমে যাওয়া না হয়, সুদূর ভবিষ্যৎ জীবনের এই উত্থান-পতন অতিক্রম করে প্রত্যেককে আহ্বান জানাচ্ছে আন্তরিকভাব।

এরূপ সাদৃশ্য পাওয়া যায় আরো বহু গানে ।

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – সাধনা ও সংকল্প, ক্রমিক সংখ্যা- ১৮8

“আপনারে দিয়ে রচিলি রে কি এ আপনারই আবরণ !

খুলে দেখ দ্বার, অন্তরে তার আনন্দ নিকেতন।।

 – – – – – – – – – – – – – – – –

ঠেলে দে আড়াল; ঘুচিবে আঁধার — আপনারে ফেল দূরে —

সহজে তখনি জীবন তোমার অমৃতে উঠিবে পূরে। ’’

স্পষ্টতই এগান আত্মঅহং, আত্মকেন্দ্রিকতা, ক্ষুদ্রতা থেকে উত্তরণের গান ।

– ‘শান্তিকেতন’ প্রবন্ধ থেকে নেওয়া কবির উক্তিটি তাঁর বক্তব্যের স্পষ্ট আঁধার বলা চলে –

 “প্রভাতের পূর্বগগনে আলোকের প্রথম বিকাশ যেমন মধুর, মানুষের জীবনের প্রথম প্রত্যুষের অরুণরেখা যেদিন জেগে ওঠে সেদিন শিশুর কণ্ঠে তার সংগীত তেমনি মধুর, তেমনি নির্মল। সমস্ত মানুষের জীবনের আরম্ভে এই মধুর সুরের উদ্‌বোধন লোকালয়ে ঘরে ঘরে দেখতে পাই। জীবনের সেই নির্মল সৌন্দর্যের ভূমিকাটি কেমন সুন্দর! জগৎসংসারে তাই যত মলিনতা থাক্‌, জরার দ্বারা মানুষ যেমনই আচ্ছন্ন হোক-না কেন, ঘরে ঘরে মনুষ্যত্ব নতুন হয়ে জন্মগ্রহণ করছে। আজ শিশুদের কণ্ঠে জীবনের সেই উদ্‌বোধনসংগীতের প্রথম কলকাকলি শুনতে পাচ্ছি– এ উদ্‌বোধন কে প্রেরণ করলেন। যিনি জীবনের অধীশ্বর তিনিই ঘরে ঘরে এই জাগরণের গীত পাঠিয়েছেন। আজ চিত্ত সেই গানে জাগ্রত হোক।

কিন্তু, এই উৎসবের সংগীতের মধ্যে একটি করুণ সুর, একটি কান্না রয়েছে; সকালের প্রভাতী রাগিণী সেই কান্না বুকের শিরা নিংড়ে নিংড়ে বাজছে। আনন্দের সুরের মধ্যে করুণার কোমল নিখাদ বাজছে। সে কিসের করুণা। পিতা ডাক দিয়েছেন, কিন্তু সকলের সময় হয়ে ওঠে নি। অনন্ত শূন্যে প্রভাত-আলোকের ভৈরবী সুর করুণা বিস্তার করে যুগ হতে যুগে ধ্বনিত হচ্ছে, তিনি উৎসব-ক্ষেত্রে ডেকেছেন। অনাদিকালের সেই আহ্বান ধ্বনিত হচ্ছে; কিন্তু, তাঁর ছেলেমেয়েদের ঘুম ভাঙে নি। তারা কেউ বা উদাসীন, কারো বা কাজ আছে, কেউ বা উপহাস করছে, কাউকে বা অভ্যাসের আবরণ কঠিন করে ঘিরে আছে। তারা সংসারের কোলাহল শুনেছে, স্বার্থের আহ্বান শুনেছে, প্রতিদিনের প্রয়োজনের ডাক শুনেছে, কিন্তু আকাশের আলোকের ভিতরে আনন্দময়ের আনন্দভবনে উৎসবের আমন্ত্রণের আহ্বান শুনতে পায় নি। ”

কাব্য সাহিত্যে উত্তরণ প্রয়াস

তাঁর কাব্য সাহিত্যেও আমরা উত্তরণ কে একই ভাবে আসতে দেখি, কিছু কাব্য রচনার উল্লেখ করা যাক এ পর্বে—

FREEDOM

Freedom from fear is the freedom I claim for you, my Motherland! – fear, the phantom demon, shaped by your own distorted dreams.

Freedom from the burden of ages, bending your head, breaking your back, blinding your eyes to the beckoning call of the future.

Freedom from shackles of slumber wherewith you fasten yourself to night’s stillness, mistrusting the star that speaks of truth’s adventurous path.

Freedom from the anarchy of destiny, whose sails are weakly yielded to blind uncertain winds, and the helm to a hand ever rigid and cold as Death.

Freedom from the insult of dwelling in a puppet’s world, where movements are started through brainless wires, repeated through mindless habits; where figures wait with patient obedience for a master of show to be stirred into a moment’s mimicry of life.

দেশাত্ববোধ নিয়ে লেখা কবির রচনায় তিনি মুক্তির কথা বলছেন ভয় হতে, বার্ধ্যকের বোঝার শঙ্কা হতে, নিদ্রা হতে; ভাগ্য অরাজকতা থেকে সত্যের সাহসী পথের কথা বলছেন ।

কাব্যটির সাথে অনায়াসেই যেন ধরা দেয় স্বদেশ পর্যায়ের এই গানটি –

    “আমি ভয়    করব না ভয় করব না।

দু বেলা   মরার আগে মরব না, ভাই, মরব না ॥

তরীখানা বাইতে গেলে মাঝে মাঝে তুফান মেলে —

তাই ব’লে হাল ছেড়ে দিয়ে ধরব না, কান্নাকাটি ধরব না ॥

শক্ত যা তাই সাধতে হবে, মাথা তুলে রইব ভবে–

সহজ পথে চলব ভেবে পড়ব না, পাঁকের ‘পরে পড়ব না ॥

ধর্ম আমার মাথায় রেখে   চলব সিধে রাস্তা দেখে —

বিপদ যদি এসে পড়ে     সরব না, ঘরের কোণে সরব না ॥”

উল্লেখ করা যাক, শ্রীমান কৃষ্ণ কৃপালানি ও শ্রীমতী নন্দিতার শুভপরিণয় উপলক্ষে আশীর্বাদ বার্তা হিসেবে রচিত তাঁর কাব্যখানি –

পত্রপুট

“…একদিন যখন কেউ কোথাও নেই

এমন সময় সোনার তারে রুপোর তারে

হঠাৎ সুরে সুরে এমন একটা মিল হল

যা আর কোনোদিন হয় নি ।

সেদিন বেজে উঠল যে রাগিণী

সেদিনের সঙ্গেই সে মগ্ন হল

অসীম নীরবে ।

গুণী বুঝি বীণা ফেলবেন ভেঙে।

অপূর্ব সুর যেদিন বেজেছিল

ঠিক সেইদিন আমি ছিলেম জগতে,

বলতে পেরেছিলেম –

আশ্চর্য!”

“…. মহাবীর্যবতী, তুমি বীরভোগ্যা,

বিপরীত তুমি ললিতে কঠোরে,

মিশ্রিত তোমার প্রকৃতি পুরুষে নারীতে;

মানুষের জীবন দোলায়িত কর তুমি দুঃসহ দ্বন্দ্বে।

ডান হাতে পূর্ণ কর সুধা

বাম হাতে পূর্ণ কর পাত্র,

তোমার লীলাক্ষেত্র মুখরিত কর অট্টবিদ্রূপে;

দুঃসাধ্য কর বীরের জীবনকে মহৎজীবনে যার অধিকার।

শ্রেয়কে কর দুর্মূল্য,

কৃপা কর না কৃপাপাত্রকে।

তোমার গাছে গাছে প্রচ্ছন্ন রেখেছ প্রতি মুহূর্তের সংগ্রাম,

   ফলে শস্যে তার জয়মাল্য হয় সার্থক।

জলে স্থলে তোমার ক্ষমাহীন রণরঙ্গভূমি,

সেখানে মৃত্যুর মুখে ঘোষিত হয় বিজয়ী প্রাণের জয়বার্তা।

তোমার নির্দয়তার ভিত্তিতে উঠেছে সভ্যতার জয়তোরণ,

ত্রুটি ঘটলে তার পূর্ণ মূল্য শোধ হয় বিনাশে।

তোমার ইতিহাসের আদিপর্বে দানবের প্রতাপ ছিল দুর্জয়,

সে পরুষ, সে বর্বর, সে মূঢ়।

তার অঙ্গুলি ছিল স্থূল, কলাকৌশলবর্জিত;

গদা-হাতে মুষল-হাতে লন্ডভন্ড করেছে সে সমুদ্র পর্বত;

অগ্নিতে বাষ্পেতে দুঃস্বপ্ন ঘুলিয়ে তুলেছে আকাশে।

জড়রাজত্বে সে ছিল একাধিপতি,

প্রাণের ‘পরে ছিল তার অন্ধ ঈর্ষা ।”

কাব্যখানির বিভিন্ন অংশ যেন স্মরণ করিয়ে দেয় ভিন্ন ভিন্ন গান –

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – জাগরণ, ক্রমিক সংখ্যা- ২৭৪

 “প্রাণের প্রাণ জাগিছে তোমারি প্রাণে,

          অলস রে, ওরে, জাগো জাগো ॥

শোনো রে চিত্তভবনে অনাদি শঙ্খ বাজিছে–

          অলস রে, ওরে, জাগো জাগো॥”

পর্যায় – পূজা, উপপর্যায় – বন্ধু, ক্রমিক সংখ্যা- ৬৭

“আমি  কেমন করিয়া জানাব আমার জুড়ালো হৃদয় জুড়ালো–

          আমার  জুড়ালো হৃদয় প্রভাতে।

আমি  কেমন করিয়া জানাব আমার পরান কী নিধি কুড়ালো–

          ডুবিয়া  নিবিড় গভীর শোভাতে ॥

আজ  গিয়েছি সবার মাঝারে, সেথায় দেখেছি আলোক-আসনে–

          দেখেছি  আমার হৃদয়রাজারে।

আমি  দুয়েকটি কথা কয়েছি তা সনে সে নীরব সভা-মাঝারে–

          দেখেছি  চিরজনমের রাজারে ॥

এই   বাতাস আমারে হৃদয়ে লয়েছে, আলোক আমার তনুতে

          কেমনে মিলে গেছে মোর তনুতে–

তাই  এ গগন-ভরা প্রভাত পশিল আমার অণুতে অণুতে।

আজ  ত্রিভুবন-জোড়া কাহার বক্ষে দেহ মন মোর ফুরালো–

          যেন রে  নিঃশেষে আজি ফুরালো।

আজ  যেখানে যা হেরি সকলেরই মাঝে জুড়ালো জীবন জুড়ালো–

          আমার   আদি ও অন্ত জুড়ালো ॥”

উত্তরণ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিচ্ছিন্ন কোনো ভাবনা নয়, তাঁর সমস্ত সৃষ্টিকর্মে উত্তরণের প্রয়াস সবসময়ই পাওয়া যায়। তাঁর জীবনের বিভিন্ন পরিস্তিতির প্রেক্ষাপটে উত্তরণ না ঘটলে বাংলা সাহিত্যের জন্য রেখে যাওয়া এই বিপুল কর্ম তাঁর কোনোদিনই পূর্নসাধন বা স্বয়ংসম্পূর্ণ হতে পারতো না বলে বিশ্বাস করি। রবীন্দ্রনাথ তাঁর জীবনের কিছু কিছু শোক থেকে উত্তরণের জন্য সময় নিয়েছেন, তাঁর পিতৃ-মাতৃ-পত্নি-পুত্র মৃত্যুশোক থেকে তিনি নিজের উত্তরণ ঘটিয়েছেন অসামান্য মনন-দক্ষতায়। এ প্রসঙ্গে উলেখ্য একটি গান যা তিনি তার পুত্র মৃত্যু শোকে লিখছেন –

প্রচন্ড গর্জনে আসিল একই দুর্দিন –

দারুণ ঘনঘটা, অবিরল অশনিতর্জন।।

ঘন ঘন দামিনী-ভুজঙ্গ-ক্ষত যামিনী,

অম্বর কৰিছে অন্ধনয়নে অশ্রু-বরিষন ।।

ছাড়ো রে শঙ্কা, জাগো রে ভীরু অলস,

আনন্দে জাগাও অন্তরে শকতি।

অকুন্ঠ আঁখি মেলি হিরো প্রশান্ত বিরাজিত

মহাভয়- মহাসনে অপরূপ মৃত্যুঞ্জয়রূপে ভয়হরণ ।।

পিতা হয়ে তিনি তাঁর পুত্রের মৃত্যুতে শোকে জর্জরিত ছিলেন এ কথা বলাই বাহুল্য, তাঁর থেকেও উত্তীর্ণ হতে তিনি বেছে নিয়েছেন সংগীত সৃষ্টির পথ যে একমাত্র পথে তিনি তাঁর অন্তরের শোক প্রশমন করতে অন্তত প্রয়াস করতে পারেন।

সুতরাং এ কথা নির্দ্বিধায় বলা যায় সৃষ্টিই ছিল তাঁর একমাত্র উত্তরণের পথ। তাঁর জীবনের যে কোন পরিস্থিতিতে তিনি তার সৃষ্টিরই মধ্য দিয়ে মুক্ত হতে চেয়েছেন, শুধুমাত্র ব্যক্তি-কেন্দ্রিকতার উত্তরণে নয়, সামাজিক ভাবনায় অথবা জাতীয়তাবাদ বোধের উত্তরণেও রবীন্দ্রনাথ একইভাবে প্রভাব রেখে গেছেন। উল্লেখ্য, বঙ্গভঙ্গের সময় অথবা ভারতবর্ষ স্বাধীনতার সময়ও রবীন্দ্রনাথের গান প্রাসঙ্গিক ভাবেই যুক্ত ছিল, সমাজবোধ বা যে কোনো আন্দোলনেই জাতিগত ঐক্য বা শক্তির ক্ষেত্রে উত্তরণ ঘটিয়ে এসেছে এবং আজও ঘটাচ্ছে তাঁর ভাবনা, তাইতো তাঁকে চির আধুনিক কবি বলা হয়, তাঁর গানও যেন সূর্য-চন্দ্রের মতই সত্য হয়ে আমাদের চিরাচরিত রূপে আলোক প্রদান করে চলেছে নিঃস্বার্থভাবে ।

রবীন্দ্রনাথের গান তথাপি সমস্ত রচনা আজও একইভাবে আমাদের অনুপ্রাণিত করে উত্তরণের পথে, আমাদের মনের অজান্তেই হৃদয়ের শুদ্ধিকরণের পথ হয়ে ওঠে তাঁর সৃষ্টি, একাকিত্ব থেকে, দৈনন্দিনতার মায়া – অবিলতা থেকে, অন্ধকার থেকে আলোর পথে, ধর্মান্ধবতা-কুসংস্কার থেকে, সকল বন্ধ হতে নিজেকে মুক্ত করে বিশ্ব ঐক্যের পথের দিশা আমরা দেখতে পাই তাঁরই লেখায়। এ কথা আগেই উল্লেখ করেছি যে তিনি নিজেও সংগীতের মধ্য দিয়েই নিজের উত্তরণের পথ খুঁজে নিতেন, প্রসঙ্গত উল্লেখ্য –

তাঁরই প্রমান স্বরূপ, এ পর্যায়ে উল্লেখ করা যায় তাঁর বিদেশ ভ্রমণের একটি ঘটনা। নোবেল পুরস্কার প্রাপ্তির পর কবি দেশের বাইরে গেছেন ৮ বার, এই প্রত্যেকবারই তাঁর সময় কেটেছে বিভিন্ন সংবর্ধনায় অংশ গ্রহণ, বক্তিতা প্রদান, কিংবা আতিথিয়তা রক্ষা সহ বিভিন্ন আনুষ্ঠানিক কাজে। কিন্তু ৬৫ বছর বয়সে রবীন্দ্রনাথ অধ্যাপক করলো ফর্মিচির আমন্ত্রণে ১৯২৬ সালে ইতালি যাত্রা করেন, প্রকৃতপক্ষে কবি আপ্যায়নের ব্যবস্থাপনায় ছিলেন তৎকালীন বহুল সমালোচিত বেনিটো মুসোলিনি ফ্যাসিস্ট সরকার। তাৎক্ষণিক আপ্যায়নে কবি মুগ্ধ হলেও তিনি সুইস দেশে গিয়ে রোমা রোঁলার সাথে আলোচনা করে তার আসল রূপের পরিচয় পেয়ে, ইতালি ও মুসোলিনি সম্পর্কে এন্ড্রুজ কে লেখা চিঠিতে ফ্যাসিজম্ কে তিনি সমর্থন করেননি এবং তীব্রভাবেই একে অনাকাঙ্খিত বলে মতামত প্রকাশ করেন, বিলেতে ‘ম্যাঞ্চেস্টার গার্ডিয়ান’ পত্রিকায় এই চিঠি প্রকাশিত হলে মুসোলিনি সমর্থক ও অনুগামীরা কবিকে বিভিন্ন পত্রপত্রিকায় তীব্র কটূক্তি বর্ষণ করেন। তীব্র কটূক্তি, লাঞ্চিত কবি ঘুরে বেড়িয়েছেন ইউরোপ, জার্মানি, নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক্, বুলগেরিয়া, রোমানিয়াসহ বিভিন্ন দেশ, বাইরের এই তীব্র কোলাহলমুখর পরিবেশ থেকে মুক্তি পেতে কবি সেই সময় সংগীতরচনাতেই এক অনাবিল শান্তি খুঁজে পেলেন।

এ সময় দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় প্রত্যিদিনের বক্তৃতা, সংবর্ধনায় ক্লান্ত ও শারীরিকভাবে অসুস্থ কবির মন একদিকে যেমন দেশে ফেরার তাগিদ অনুভব করছেন অন্যদিকে তাঁর এই মানসিক তাগিদ সংগীত সৃষ্টিতে মুক্তির পথ খুঁজে চলেছেন সবসময়। তেজেশ চন্দ্র সেনকে একটি পত্রে কবি লিখছেন –

“প্রতিদিন অরুণোদয়ে, প্রতি নিস্তব্ধ রাত্রির তারার আলোয় তাদের ওঙ্কারের সঙ্গে আমার ধ্যানের সুর মিলাতে চাই ।….অন্তরে অন্তরে যে অসহ্য চঞ্চলতা অনুভব করি তা নিজের কাছ থেকেই উদ্দামবেগে পালিয়ে যাবার জন্যে। পলাব কোথায় ? কোলাহল থেকে সংগীতে”।

উল্লেখপঞ্জি

১. রবীন্দ্রনাথের সংগীত-দর্শন ও সংগীত-ভাবনা, ডঃ অরুণ কুমার বসু, রবীন্দ্রনাথের সংগীত চিন্তার নানা দিক, – ডঃ গৌতম নাগ, রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়, কলকাতা, ২০১০, পৃ – ৯

২. রবীন্দ্ররচনাবলী, সপ্তম খন্ড, শান্তিকেতন, ‘সৌন্দর্য্যের সকরুণতা’– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বিশ্বভারতী, কলকাতা, ১৪১০

সহায়ক গ্রন্থপঞ্জী

১. বসু। ডঃ অরুণ কুমার। ‘রবীন্দ্রনাথের সংগীত চিন্তার নানা দিক’। কৰ্মসচিব রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়। কলকাতা। ২0১0 খ্রিষ্টাব্দ

২. ঠাকুর। রবীন্দ্রনাথ। ‘গীতবিতান’ (অখণ্ড)। বিশ্বভারতী গ্রন্থনা বিভাগ। কলকাতা ১৩৭১ বঙ্গাব্দ

৩. ঠাকুর, রবীন্দ্রনাথ। ’রবীন্দ্ররচনাবলী’। সপ্তম খন্ড। শান্তিকেতন। ‘সৌন্দর্য্যের সকরুণতা’– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। বিশ্বভারতী। কলকাতা। ১৪১০ বঙ্গাব্দ